মাটির ওপরে-নিচে থাকা হামাসের সকল সদস্য মারা যাবে: নেতানিয়াহু

প্রকাশিতঃ 12:16 pm | October 26, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এমন তথ্যই জানিয়েছেন। তবে সেই অভিযান কখন পরিচালনা করা হবে, সেটি জানাতে অস্বীকার করেছেন তিনি।

এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ‘হাজার হাজার’ সন্ত্রাসীকে হত্যার দাবি করেছেন তিনি। তার দাবি, এটা ‘কেবল শুরু’। এমনকি মাটির ওপরে-নিচে ও গাজার ভেতরে-বাইরে থাকা হামাসের সকল সদস্যকে হত্যার হুমকিও দেন নেতানিয়াহু।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা গাজায় স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে কখন সেই আক্রমণ হবে সেটির আরও বিশদ বিবরণ না দিয়ে বিষয়টি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। ইয়েদিওথ আহরনোথ সংবাদপত্র এই তথ্য সামনে এনেছে।

নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছি এবং এটি কেবল শুরু। একইসঙ্গে আমরা স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে সেটি কখন হবে, কিভাবে বা কত সেনা তাতে অংশ নেবে সে সম্পর্কে আমি বিস্তারিত বলব না। আমরা যে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করছি তাও আমি বিস্তারিত বলব না। এসব বিষয়ে জনসাধারণ বেশির ভাগই জানেন না, এবং এগুলো এভাবেই হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, অভিযানের দুটি লক্ষ্য রয়েছে: ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের সক্ষমতা ধ্বংস করা এবং বন্দিদের মুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা। ইসরায়েলি এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাটির ওপরে ও নিচে এবং গাজার ভেতরে এবং বাইরে থাকা হামাসের সকল সদস্য মারা যাবে।’

প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।

হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০০ ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি। এছাড়া আরও দুই শতাধিক মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।

হামাসের হাতে আটক বিপুল এসব বন্দির মধ্যে ইসরায়েলি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিকও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজেও গাজায় আটক সব বন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

বুধবার তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবরের সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়ে যে কেলেঙ্কারি হয়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। তার দাবি, ‘সবাইকে উত্তর দিতে হবে। আমাকেও। কিন্তু এসব হবে যুদ্ধের পরই।’

নেতানিয়াহু অবশ্য এর আগে হামাসের হামলার পূর্বাভাস এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণ করা থেকে বিরত ছিলেন। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এখন কেবল একটি লক্ষ্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়: আর সেটি হচ্ছে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া’।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘একসাথে আমরা লড়াই করব এবং একসাথে আমরা জিতব।’

কালের আলো/এসএমআর