বাংলাদেশ-জিসিসির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সমঝোতা স্মারক

প্রকাশিতঃ 12:45 pm | November 19, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশের সঙ্গে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সহযোগিতার বিষয়ে অংশীদারিত্ব সংলাপের একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও জিসিসির পক্ষে সংস্থাটির মহাসচিব ড. নায়েফ ফালাহ এম আল-হাজরাফ এই স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বাহরাইনের মানামা ডায়ালগ কনফারেন্সের সাইডলাইনে এই স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও জিসিসি মহাসচিব নায়েফ আল হাজরাফে এক দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে জিসিসিভুক্ত দেশগুলো ও বাংলাদেশের মধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫০ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী জিসিসিভুক্ত দেশে কর্মরত রয়েছেন, যারা জিসিসি ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছেন।‘ এসব দেশে আরও বেশি দক্ষ অভিবাসী কর্মী নিয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস উল্লেখ করে এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অবৈধ পথে অর্থ প্রেরণ বাংলাদেশ ও জিসিসি দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।’ মানি লন্ডারিং বন্ধ করার বিষয়ে জিসিসির সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বের অন্যতম জ্বালানি যোগানদাতা অঞ্চল এবং বিশ্ব রাজনীতিতে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা সবার জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জিসিসিভুক্ত দেশের সাথে বাংলাদেশের একটি জ্বালানী নিরাপত্তা কাঠামো তৈরির বিষয়ে মহাসচিবের সাথে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশ জিসিসি সদস্য দেশ ও বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে উল্লেখ করেন আব্দুল মোমেন।

বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তৈরি পোশাক, পাট, চামড়াজাত পণ্য, চা এবং ওষুধ রফতানি করে থাকে। চাল, সবজি ও মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। জিসিসির বাজারে বাংলাদেশের মানসম্পন্ন পণ্যের রফতানি আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জিসিসির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি করার কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদান করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশ জিসিসি সদস্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ এই সমস্যার কারণ এবং মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে জিসিসি সচিবালয়ের সহায়তা প্রত্যাশা করে।

এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বি-পাক্ষিক (পূর্ব) সচিব মাশফি বিনতে শামস, বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এসবি/এমএম

Print Friendly, PDF & Email