দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি নেই : প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 6:57 pm | June 02, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, যখন আমাদের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী ক্যাপটিভ পাওয়ার দিয়েছিলেন। এখন আমাদের বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। সরকার একদিকে ভর্তুকি দিচ্ছে, অন্যদিকে দাম কমানোর চেষ্টা করছে। বিদেশে জ্বালানির দাম বাড়ছে। আমাদের উপায় নেই।
তিনি বলেন, জ্বালানি ক্ষেত্রকে আমরা নিরবচ্ছিন্ন করতে চাই, সাশ্রয়ী মূল্য রাখতে চাই, ভবিষ্যতে আধুনিক একটা সেক্টর বানাতে চাই। সেজন্য আগামী ৬-৭ বছরে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট লাগবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামের বিষয়টি এখন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের হাতে। আমি এতটুকু বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী এমন কোন কিছু করবেন না, যাতে তা সাধারণ মানুষের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি না করে আর্থিক ঘাটতি মোকাবিলায় বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেন ক্যাবের সহ-সভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম।
নসরুল হামিদ বলেন, সবাই বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। আসলে বিদ্যুতের দাম আমরা কোনোবারই বাড়াই না, সমন্বয় করি। সেই সমন্বয়টা সাশ্রয়ী কি না সেটাই আমাদের দেখতে হবে। সেই বিষয়টাই আমরা আগামীতে লক্ষ্য রাখবো। এরকম কিছু প্রধানমন্ত্রী করবেন না, যেটা জনগণের ওপর একটা ভার বহন হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ‘টার্গেট ফিক্সড’ করতে হবে যে কাদের জন্য আমরা ভর্তুকি দেবো, কাদের জন্য আমরা সমন্বয় করবো। কতটুকু সাশ্রয়ী আমরা করবো। এই মুহূর্তে সারাবিশ্বেই যে অবস্থা, জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম ঠিক রাখা কঠিন। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশকে তাদের আয় ও সংগতির ওপর নির্ভর করে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
ভর্তুকি প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার ভর্তুকি দেয়, আমি মনে করি এটা একটা ইনভেস্টমেন্ট। ইনভেস্টমেন্ট এ কারণেই করে, যে পরিমাণ ইউটিলিটি বিল ভোক্তা সেভ করবেন, সেই পরিমাণ অর্থটা যেন তিনি তার অন্য ক্ষেত্রে ব্যয় করতে পারেন।
তিনি বলেন, আমাদের একটা লাইফলাইন আছে। এক কোটি ৪০ লাখের ওপর একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠী গ্রাহক আছে, যাদের আমরা দুই টাকার কিছুটা ওপরে বিদ্যুৎ চার্জ করি। বিদ্যুতের দাম যদি ক্যাবের কথায় ৭ টাকা রাখতে হয়, তাহলে উনারা কীভাবে ব্যবস্থা করবেন। প্রশ্ন আসে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আমরা (সাশ্রয়ী মূল্যে) দিচ্ছি কি না। হ্যাঁ আমরা সেটা দিচ্ছি।
নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের আরেকটা টার্গেটেড জনগোষ্ঠী হলো কৃষক। সারে আমরা ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস দিচ্ছি, সেখানে সরকার বড় একটা ভর্তুকি দিয়ে আসছে। সেটা দেওয়ার ফলেই কোভিডকালীনও খাদ্যের অভাবে ভোগেনি দেশ।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছিলাম শতভাগ বিদ্যুতায়ন করবো। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করেছি। আমাদের এমন কোনো অঞ্চল নেই, যেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।
নাগরিক সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান। বক্তব্য রাখেন ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বদরুল ইমাম, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রমুখ।
কালের আলো/ডিএস/এমএম