আন্দোলনে উসকানি ও অপপ্রচারে লিপ্ত ছিলেন তারা : র‌্যাব

প্রকাশিতঃ 4:06 pm | December 10, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর স্বামীবাগের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‍্যাবের দাবি, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকে পুঁজি করে আটক ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অপচেষ্টা করে আসছিল।

এছাড়া বিভিন্ন আন্দোলনে উসকানি ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের অভিযোগ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তারা দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে অপপ্রচার চালাতো।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (২৯), ওয়ায়েজ কুরুনী (২৭), তাওহীদুল ইসলাম (২৬), গাজী সাখাওয়াত (২৯) ও হাবিবুর রহমান (৩০)।

অভিযানে জব্দ করা হয়- নগদ দুই লাখ টাকা, ল্যাপটপ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ও বিভিন্ন দেশবিরোধী, নাশকতা ও উসকানিমূলক লিফলেট।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত বিশ্লেষণ করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান যে, বর্তমান রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতিধারাকে বানচাল ও নস্যাৎ করার জন্য রাষ্ট্রের শান্তি-শৃংখলা বিঘ্ন, সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র, সরকারের সম্পদ ও জনসাধারণের জান-মালের ক্ষতি, শান্তিপ্রিয় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্ঠির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘তাঁরা অনলাইনে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বাইরে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেন তাঁরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে তাঁরা দেশের বাইরে বিভিন্ন সংস্থার কাছে কল্পিত এবং বানোয়াট তথ্য পাঠান।’

‘বিগত সময়ের বিভিন্ন ইস্যু ও সাম্প্রতিক সময়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকে পুঁজি করে তাঁরা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অপচেষ্টা করে আসছিলেন। আন্দোলনকে উসকে দিয়ে তাঁরা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালান।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত। অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে তাঁরা সংঘবদ্ধভাবে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিলেন।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপের মাধ্যমে তাঁরা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন বলেও দাবি করে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত ও নাশকতায় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে দাবি করে র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন নামে ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করে যেখানে রাষ্ট্রবিরোধী গুজব সৃষ্টির পরিকল্পনা করে। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও রাষ্ট্রের কার্যক্রম নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করে ভার্চুয়াল জগতে প্রচারের ব্যবস্থা করে থাকেন। এ জাতীয় বিভিন্ন কন্টেন্ট ল্যাপটপে রক্ষিত রয়েছে। বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট এডিট করে তৈরি ও প্রচার করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত তাঁরা। এ ছাড়া রাষ্ট্রবিরোধী সাইবার ফোর্স পরিধি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ব্যানারে রিক্রুটিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। বিভিন্ন ঘটনাকে কীভাবে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা যায়, এ সংক্রান্ত নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করা ও মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করে থাকেন তাঁরা।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আটক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও তাওহীদুল ইসলামের নামে বিভিন্ন থানায় রাষ্ট্রবিরোধী, নাশকতা, সন্ত্রাসবিরোধী এবং বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ শিবিরের কর্মী ছিলেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন। বাকি চার জনের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কালের আলো/ডিএসবি/এমএম