আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর ডাক মান্নার

প্রকাশিতঃ 6:54 pm | October 27, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর ডাক দিয়েছেন নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। সরকার হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই তাদের লক্ষ্য বলে জানান তিনি। সরকারকে কীভাবে গদি থেকে নামাতে হয় তা জানা আছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা।

রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রধান অতিথি ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন এবং প্রধান বক্তা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আদর্শ ভিন্ন হলেও জাতীয় যুক্তফ্রন্টের দলগুলোর লক্ষ্য অভিন্ন জানিয়ে মান্না বলেন, ‘স্বাধীনতার পক্ষে যত দল আছে, সমস্ত দল এক হবে, সমস্ত মানুষ এক হবে। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে হটাতে হবে।’

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে মান্না বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের যিনি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন সেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করতে না পেরে তার প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করেছে।’

জোটের আরেক নেতা মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তারেরও নিন্দা করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা। মান্না বলেন, ‘এক বিশিষ্ট নারী সাংবাদিকের মানহানির মামলা হয়েছে। সেই নারী সাংবাদিকের পক্ষে কত মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে।’

মান্না কথা বলেন খালেদা জিয়ার কারাবরণ নিয়েও। বলেন, ‘আপনাদের সবার প্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিয়েছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী তিনি, তিনি হাঁটতে পারেন না। দোতলা সিঁড়ি বেয়ে তিনি উঠতে পারেন না। সেই নেত্রীকে এই সরকার অন্যায়ভাবে কারাগারের অন্ধকারে জরাজীর্ণ একটি কক্ষে বন্দী করে রেখেছে।’

মান্না বলেন, ‘বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে রেখেছে এই সরকার। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার কত রকম বাধা দিয়েছে আপনারা দেখেছেন। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই সমস্ত বাধা উপেক্ষ করে এই সমাবেশে আসার জন্য।’

ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকার সবসময় বলার চেষ্টা করছে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, তোমাদের অধীনে নির্বাচন হবে না। গদি ছাড়তে হবে, ভোট দেয়ার অধিকার দিতে হবে। আর যদি তা না হয়, তবে কীভাবে গদি থেকে নামাতে হয় তা জানি।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়। এটা তাজউদ্দীনের আওয়ামী লীগ নয়। এটা লুটপাটের আওয়ামী লীগ। আমরা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করি। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য করেছি। এ ঐক্য ক্ষমতার ঐক্য নয়, জনতার ঐক্য।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি শাহাদত হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, জেএসডির সভাপতি আ সম আব্দুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, মীর নাসির, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূইয়া, গোলাম আকবর খন্দকার, সুকোমল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/পিএম

Print Friendly, PDF & Email