মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র আসছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 9:49 pm | October 03, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে অস্থিতিশীল করতে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র আসছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেছেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে অস্থিতিশীল করতে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র আসছে। সেখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। বর্তমানে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে।
রোববার (০৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে আমরা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য রয়েছে। পরিস্থিতিও বেশ ভালো।
‘তবে এ স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে অস্থির করতে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র আসছে। এর আগেও এখানে অস্ত্র এসেছে। বিভিন্ন গ্রুপে মারামারিও হয়েছে। যে নেতাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে সোচ্চার ছিলেন। এ কারণেও এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মারামারি আপনারা আগেও দেখেছেন। মিয়ানমার থেকে বিভিন্নভাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ অস্থির করার জন্য এখানে অস্ত্র আসছে। অস্ত্র নিয়ে তাদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য বিভিন্ন গ্রুপের মারামারি দেখেছেন।’
‘যে নেতার (মুহিবুল্লাহ) কথা বলছেন, সে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সবসময় সোচ্চার ছিল। আমরা মনে করি, তার এ ঘটনাটা তদন্ত করে এর মূল কারণটা বের করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা তাকে হত্যা করেছে বলে আমরা মনে করছি। শিগগির তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারবো। তদন্ত চলছে, আমরা শিগগির এর ব্যবস্থা করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, কারা অস্থিরতা সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছে, কোনো বিদেশি সংস্থা এর সঙ্গে জড়িত কিনা- সবকিছু তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত করে সবকিছু আপনাদের জানাবো।
ক্যাম্পে এ হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত কিনা- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছুই বলতে পারছি না। আমরা অনেক কিছুই সন্দেহ করছি। তদন্তের পর আপনাদের জানাবো।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা এত শিথিল হয়ে গেল কীভাবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা শিথিল হয়নি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতুর্দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছি, সেটা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতুর্দিকে ওয়াচ টাওয়ার করছি সেটাও কিছুদিনের মধ্যে শেষ হবে। রাস্তাঘাট তৈরি করছি। মনে রাখতে হবে ১১ লাখ লোক সেখানে বাস করে। ১১ লাখ লোক দুটি থানার কিছু অংশে বাস করে। এত বিশাল জনগোষ্ঠীর সবকিছু মেইনটেইন করা খুব সহজ কাজ নয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী সমন্বিতভাবে ভালো কাজ করছে বলেই আইনশৃঙ্খলা এখনো সঠিক রয়েছে। কক্সবাজার একটা পর্যটন এলাকা, সেখানে লাখ লাখ পর্যটক যাচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করে বলেই সব কিছু ভালো অবস্থানে আছে।’
গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান ছিলেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন তিনি।
কালের আলো/ডিএসবি/এমএইচএ