বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে: কাদের

প্রকাশিতঃ 4:47 pm | October 02, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে। বিএনপির কথিত জোয়ার এখন ভাটায় পরিণত হয়েছে। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কা বিএনপিকে আগেই পেয়ে বসেছে। তাই তাদেরই হৃদকম্পন শুরু হয়েছে।

শনিবার (২অক্টোবর) নিজের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উপস্থাপন করেন, আর মাঝে মাঝে তার বাকচাতুর্য কল্পনাকেও হার মানায়। বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারে নাকি সরকারের হৃদকম্প শুরু হয়েছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য সৃজনশীল কথামালার চাতুরী৷ এতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর আত্মতৃপ্তি বোধ করতে পারেন, কর্মীদের রোষানল থেকে নিজেদের সুরক্ষার জন্য কল্পনার ফানুস উড়াতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা যে তাদের বক্তব্যের বিপরীত, তা দেশের মানুষ ঠিকই জানেন।

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কা বিএনপিকে আগেই পেয়ে বসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই তাদেরই হৃদয়ে হৃদকম্পন শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভয়ে কাঁপে না, চ্যালেঞ্জ আর লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, আর সেই রাজনীতিই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করে যাচ্ছে।

এদেশের রাজপথ জানে আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের বীরত্বগাঁথা, আর সমৃদ্ধ ইতিহাস উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ জানে বিএনপির হঠকারিতা, গণতন্ত্র হত্যা, ষড়যন্ত্র, লুটপাট আর সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা। বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ার তো গত ১৩ বছরে কোনো নির্বাচনে দেখা যায়নি ৷ তারা ভরাডুবির ভয়ে এখন নির্বাচন বিমুখ, তাই রাজপথ আর ভোটের ময়দান ছেড়ে গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। শেখ হাসিনা সরকার আর আওয়ামী লীগকে হুমকি ধামকি দিয়ে লাভ নেই ৷ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের যে অপচেষ্টা করছেন তা আমাদের অজানা নেই।

বিএনপির সবকিছুতেই শর্ত এবং মামার বাড়ির আবদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে নাকি তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, আসলে বিএনপি ভালো করেই জানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি একটি মীমাংসিত বিষয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল কে করেছে? উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে এটা বাতিল হয়েছে, এ পদ্ধতি ছিলো একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, দীর্ঘ মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চলতে পারে না। দেশের গণতন্ত্র যখন এগিয়ে যায় তখন সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা ফিরতে শুরু করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, এ প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।

তিনি বলেন, যারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশা আর সুবিধাবাদ চালু করেছিলো, যাদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, আজ তারাই গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব আপনি নির্বাচিত হয়েও কেন সংসদে গেলেন না? এটা কোন গণতন্ত্র? ভোটাধিকার নিয়েতো আপনারাই ছিনিমিনি খেলেছিলেন। কারা হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসন করেছিলো? কারা সেনাপ্রধান পদ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলো? কারা ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলো? কারা ১ কোটি ২৭ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে জনগণের অধিকার হরণ করতে চেয়েছিলো? এতসব প্রশ্নের জবাব আশাকরি বিএনপি মহাসচিব দেবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সময় মতো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অযথা মাঠ গরম না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল