নতুন মাইলস্টোন স্পর্শ করলো বাংলাদেশ, যোগ দিলো ওআইসির নারী উন্নয়ন সংস্থায়
প্রকাশিতঃ 4:50 am | September 15, 2021

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট, কালের আলো :
নারীর ক্ষমতায়নে সারা বিশ্বেই ‘রোল মডেল’ বাংলাদেশ। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এবার নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বপরিমন্ডলে গৌরবময় আরও এক অধ্যায়ের সূত্রপাত করেছে।
নতুন এক মাইলস্টোন স্পর্শ করে ২৬ তম দেশ হিসেবে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) নারী উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থায় নিজেদের যুক্ত করেছে বাংলাদেশ।
মুসলিম উম্মাহর নারীদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ মুসলিম দেশগুলোর এই জোটে যোগ দেওয়ার ঘটনার নেতৃত্ব দিয়ে অবিস্মরণীয় এক মুহুর্তই যেন পার করলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেদ্দায় অবস্থিত ওআইসির সদর দপ্তরে ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের উপস্থিতিতে তিনি নারী উন্নয়ন সংস্থার সংবিধিতে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য অবদান ও অভাবনীয় বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ এক বার্তাই দিয়েছেন। খবর রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রের।
জানা যায়, সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ওআইসির নারী উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিশরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত এই নারী উন্নয়ন সংস্থা যাত্রা শুরু করে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই। এরই মধ্যে বাংলাদেশসহ ২৬টি ওআইসি সদস্য রাষ্ট্র এর সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছে।

বিশ্বের বুকে গুরুত্বপূর্ণ নারী কণ্ঠ শেখ হাসিনা
ওআইসির নারী উন্নয়ন সংস্থায় বাংলাদেশের যোগদান নারীর ক্ষমতায়ন, নারী-পুরুষ সমতা ও নারীর অধিকারের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের অঙ্গীকারের প্রতিফলন বলেই মনে করেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও একজন নারী। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর সরকারপ্রধান হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।’
রাষ্ট্রদূত বলেন,‘ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের বুকে একজন জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ নারী কণ্ঠ ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে স্বীকৃত। তার আমলে নারীদের উচ্চশিক্ষা, নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন পঞ্চাশে উন্নীত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার সংস্থায় ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য নির্ধারিত। সরকারি চাকরিতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। উচ্চপদে নারীরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক নারী কৃষি খাতে ও পোশাক উৎপাদন খাতে কাজ করছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ নারী কর্মকর্তা কাজ করেছেন।

নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের অর্জন বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নারী উন্নয়ন সংস্থায় যোগদানের ফলে আমরা ওআইসি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে নারী উন্নয়ন বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবো। আমরা আশা করি এই সংগঠন মুসলিম উম্মাহর নারীদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।’
বাংলাদেশের যোগদানকে স্বাগত জানালো ওআইসি
নারী উন্নয়ন সংস্থায় বাংলাদেশের যোগদানকে স্বাগত জানিয়ে ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নে ও উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে একটি রোল মডেল। এই সংস্থায় বাংলাদেশের যোগদান যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’ পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীদের অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসাও করেন।
কালের আলো/জিকেএম/এমএএএমকে