অবৈধ বিট কয়েন বিক্রয় চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
প্রকাশিতঃ 6:01 pm | June 20, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ বিট কয়েন বা ভার্চুয়াল মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় চক্রের অন্যতম হোতা হামিমসহ ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-হামিম প্রিন্স খাঁন (৩২), রাহুল সরকার (২১), সঞ্জিব দে ওরফে তিতাস (২৮) ও মো. সোহেল খান (২০)।
রোববার (২০ জুন) দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজার বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উয়িংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, শনিবার (১৯ জুন) রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর দারুস সালাম থানার মাজার রোডস্থ এলাকা থেকে অবৈধ বিট কয়েন বা ভার্চুয়াল মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় চক্রের অন্যতম হোতা হামিমসহ চারজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় দুটি ল্যাপটপ, দুটি ডেভিট কার্ডও জব্দ করা হয়েছে।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তাররা ভার্চুয়াল জগতে বা ইন্টারনেটের সাইট হতে একাউন্ট করে ভার্চুয়াল মুদ্রা/ক্রিপ্টো কারেন্সি/বিট কয়েন ক্রয়/বিক্রয় করে থাকে। তারা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাংলাদেশি বেশ কিছু অসাধু ডোমেইন হোল্ডার/ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে অর্থ লেনদেন করে।

এছাড়া গ্রেপ্তাররা ভার্চুয়াল জগতে অবৈধ ডার্ক পর্নোসাইট থেকে পর্নোগ্রাফি ক্রয় করে। তারা পর্নোগ্রাফিগুলো অর্থের বিনিময়ে ছড়িয়ে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ভার্চুয়াল মুদ্রা/ক্রিপ্টো কারেন্সি/বিট কয়েন অত্যন্ত লাভজনক বলে প্রচারণা চালায়। এমন প্রচারণার মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের অবৈধ লেনদেনে প্রলুব্ধ করে থাকে। আগ্রহীদের তারা অর্থের বিনিময়ে ক্রিপ্টো কারেন্সি প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
এছাড়া তারা বেশ কিছু আগ্রহীদের প্রলুব্ধ করেছে। তারা তাদের কাছ থেকে নেওয়া কোটি কোটি- টাকা বিনিয়োগ করেছে।
গ্রেপ্তাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত যেখানে বিট কয়েন ব্যবসায় আগ্রহীরা যুক্ত রয়েছে।
গ্রুপে কয়েক হাজার সদস্য রয়েছে। তারা প্রতি মাসে প্রায় ১.৫ কোটি টাকা লেনদেন করে বলে জানা যায়। এ চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তারকৃত হামিম প্রিন্স খাঁন এবং বাকিরা তার সহযোগী।

র্যাবের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গ্রেপ্তার হামিম প্রিন্স খাঁন ২০১৩ সালে ফরিদপুরের একটি কলেজ থেকে ইংরেজিতে বিএ (সম্মান) পাস করে। পরবর্তীতে তিনি ইউটিউবে ভিডিও দেখে কম্পিউটারের ওপর পারদর্শিতা লাভ করেন। তিনি ২০১৩ একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কম্পিউটারের ওপর দক্ষতা লাভ করে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলেন।
পরবর্তীতে ক্রিপ্টো কারেন্সির ওপর দক্ষতা লাভ করে প্রায় ৫০ এর বেশি মানুষকে বিট কয়েন লেনদেন প্রশিক্ষণ দিয়েছেন হামিম।
খন্দকার আল মঈন বলেন, বিট কয়েন ছাড়াও হামিম লিটকয়েন, ডগকয়েন, ইথারিয়াম, ব্রাস্ট, ন্যনো ইত্যাদি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। তিনি মূলত যুক্তরাষ্ট, যুক্তরাজ্য এবং কানাডাসহ উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ কার্যক্রম চালিয়ে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।
তিনি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করে অন্যের ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করে বিট কয়েন কিনে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ভার্চুয়াল জগতে তার ১৫/১৬টি ওয়ালেট রয়েছে বলে জানান তিনি
কালের আলো/বিএস/এমএম