মাটিরাঙায় বাঙালিদের উপর ইউপিডিএফের সশস্ত্র হামলা, আহত ১৫

প্রকাশিতঃ 5:28 pm | April 06, 2021

কালের আলো সংবাদদাতা:

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার বাঙালি কৃষকদের উপর হামলা চালিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

রোববার (৪ এপ্রিল) পার্বত্য খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী মাটিরাঙা উপজেলার তবলছড়ির লাইফু কার্বারীপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এরপর সোমবার(০৫ এপ্রিল) আবার গ্রামে প্রবেশ করে সশস্ত্র হামলা চালায় ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীরা।

স্থানীয় বাঙালীরা জানান, স্থানীয় বাঙালিরা লাইফু কার্বারীপাড়া ও আশপাশ এলাকায় নিজেদের জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। রোববার লাইফু কার্বারীপাড়া এলাকায় কচু চাষের জন্য কাজ করতে গেলে ইউপিডিএফের ৩০-৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে জমিতে কাজ করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের মারধর করে ৬০-৭০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এ ঘটনায় আনুমানিক ১০ জন বাঙালি আহত হয়। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছানোর পূর্বেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

এর পরদিন সোমবার(০৫ এপ্রিল) সকালে আবার বাঙ্গালি গ্রামে প্রবেশ করে বাঙ্গালিদের বেধড়ক মারধর করে ঘর থেকে বাহির করে দেয় ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। একই দিনে রাত ৯ টার দিকে পুনরায় বাঙ্গালি গ্রামে ৫০/৬০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হানা দেয় এবং বাঙ্গালিদের মারধর ও ঘরবাড়ি হতে বের করে দেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এ ঘটনাতেও আহত হয়ে বেশ কয়েকজন বাঙালি কৃষক। পরে খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে মুসলিমপাড়া, ইসলামপুর, শুকনাছড়ি সহ আশে পাশের গ্রাম থেকে বাঙালিরা একত্রিত হয় তাইন্দং বাজারে। বাঙ্গালিরা একত্রিত হয়ে ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় মুসলিমপাড়ার পংবাড়ী এলাকার বাঙ্গালি মফিজ মিয়ার দখলীকৃত সেগুন বাগানের ৩ শতাধিক সেগুন গাছ কেটে দেয়। এরপর নিরীহ আনু মিয়ার চায়ের দোকান দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার সময় পুড়িয়ে দেয়।

আহতরা সবাই তবলছড়ি ও তান্দিং ইউনিয়নের ইসলামপুর ও শুকনাছড়ি এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে দুজন পানছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার(০৬ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, গুইমারা রিজন কমান্ডার মাটিরাঙা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় বাঙ্গালিরা মনে করেন, সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের ফলে পাহাড়ে উপজাতি সন্ত্রাসীদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ে বর্তমানে নিরাপত্তা সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে বাঙ্গালিদের উপর হামলা করার সাহস পাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ২৪০ টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করে নেয়৷

কালের আলো/ডিএসকে/এমএম