ব্যর্থ হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের

প্রকাশিতঃ 5:49 pm | July 11, 2019

আন্দোলন এবং নিবার্চনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, আন্দোলন এবং নিবার্চনে ব্যর্থ হয়ে এখন অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি, অপপ্রচারই তাদের একমাত্র পুঁজি।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় ‘পদ্মা সেতুতে মাথা বা রক্ত লাগবে’—এমন গুজবের পেছনে বিএনপিকেই ইঙ্গিত করেন তিনি।

তিনি বলেন, আজকে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে হঠাৎ গুজব। গুজবের ডালপালা বিস্তার লাভ করেছে। পদ্মা সেতু নিজের অর্থায়নে হচ্ছে—এটা তারা মানতে পারছে না। পদ্মা সেতু আজকে দুই কিলোমিটার দৃশ্যমান এবং ৭১ ভাগের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে। এটা তাদের গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে। সেজন্য বলে, পদ্মা সেতুর জন্য নাকি লাখো মানুষের মাথা আর রক্তের প্রয়োজন।

‘এরকম উদ্ভট উন্মাদের বক্তব্য আসছে। এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাইকে অ্যাকটিভ হতে হবে। সর্বমুখী যুদ্ধে লিপ্ত হতে হবে। শুধু রাজপথে স্লোগান নয়। আজকে সাইবার অ্যাটাক হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আওয়ামী লীগকে সময়ের উপযোগী, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী মানুষের প্রয়োজনে যেমন নেতৃত্ব দিতে হবে, তেমনই অপ্রপচারের বিরুদ্ধেও লড়াই চালাতে হবে।’

সামনে কঠিন লড়াই আসছে বলে নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মনে রাখতে হবে সাইবার অ্যাটাকের মোকাবিলা করতে পেরেছি বলেই নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছি। সামনে কঠিন লড়াই আছে। আপনারা মনে করবেন না, বর্তমানে যেমন শান্তিপূর্ণ সময় যাচ্ছে, এমনই যাবে। তামিল বিদ্রোহ শান্ত করে শ্রীলঙ্কা মনে করেছিল তাদের দেশে শান্তি বিরাজ করবে। কিন্তু সেখানে সন্ত্রাসের যে হামলা হলো, সেভাবে এদেশে তেমন ঘটনা বা হলি আর্টিজানের মতো ঘটবে না—এটা ভাববার কোনও কারণ নেই। কাজেই সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। সরকারকে কোণঠাসা করার জন্য, বিপদে ফেলার জন্য বিএনপিসহ বিরোধী শক্তিগুলো নানা তৎপরতা চালাচ্ছে।’

দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বিএনপির অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের কোনও সংকট নেই। গণতন্ত্রের সংকট আছে বিএনপিতে। নিজে নির্বাচিত হয়ে মির্জা ফখরুল সাহেব সংসদে গেলেন না। অথচ সেই আসনে তার লোক নির্বাচনে অংশ নিলো, এই প্রশ্নের জবাব দেশবাসী জানতে চায়।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিনের ব্যাপার বরাবরই আদালতের বিষয়। আওয়ামী লীগ তাকে জেলে বন্দি করেনি। আদালতের আদেশে দুর্নীতি মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। এটা আইনের ব্যাপার। আইনিভাবে তাকে বের করে আনতে পারলে, সেটা আপনাদের ব্যাপার। সরকার তাকে মুক্তি দিতে পারে না। কারণ, বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগে সরকার হস্তক্ষেপ করে না। এখানে আওয়ামী লীগ বিএনপির বিষয় নয়। বিএনপির যদি সক্ষমতা থাকে খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করে না কেন? তারা শুধু মুখে হাঁকডাক দেয়। দেখি না তারা আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে বের করুক।’

আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রাথমিক সদস্য অভিযান করার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন দলটির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা। তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগের সদস্য পদ যাকে তাকে দিতে পারবো না। নির্বাচনের সময় জোয়ারে অনেকেই আওয়ামী লীগের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, নৌকার পক্ষে মিছিল করেছেন, কিন্তু আমরা এখানে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবো না। সেটা আমাদের নীতি ও আদর্শ কতোটা গ্রহণ করবে, ভাবতে হবে।

‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি কেউ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারে না। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো। আমাদের কোয়ালিটির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। দলকে খারাপ লোক থেকে মুক্ত করতে হবে। দলে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে চাই, দূষিত রক্তের কোনও প্রয়োজন নেই। দলে যাতে দূষিত রক্ত সঞ্চালন না হয়, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। দল করলে সবাইকে নিয়ম এবং শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। এটা যারা মানবেন না, তাদের দল করার কোনও অধিকার নাই।’

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ।

কালের আলো/এআর/এমএম