ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের সুর

প্রকাশিতঃ 8:47 pm | August 20, 2025

কালের আলো রিপোর্ট:

বিএনপি ও জামায়াতের পর নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) ইসলামী দলগুলোকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। তবে আকিদাগত বিরোধের পরও দেশের ইসলামী দলগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচ সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। এই ঐক্যের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। একসময় জামায়াতের কট্টর সমালোচক হলেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও এবার মত পাল্টে ঐক্যের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তারা মনে করছে, ইসলামী দলগুলোর ভোট একীভূত করা গেলে নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদে আসনসংখ্যা অনেক গুণ বাড়ানো সম্ভব।

জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার জন্য ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, দেশের বিশিষ্ট আলেমসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছে। এসব আলোচনায় মূলত ইসলামপন্থি দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি হয়েছে।

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের দাবি, দেশ, উম্মাহ ও ইসলামের স্বার্থে কোনো সমালোচনা বা প্রতিবন্ধকতা নির্বাচনী সমঝোতাকে ঠেকাতে পারবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশের ইসলামিক চিন্তাবিদ ও আলেম-ওলামা বুঝতে সক্ষম হয়েছেন যে এবারের নির্বাচনে সব ইসলামী শক্তির মধ্যে একটা নির্বাচনী ঐক্য থাকতে হবে। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন এবং আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের মধ্যে অচিরেই একটা সমঝোতা হতে যাচ্ছে -ইনশাআল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা হতে পারে, সেখানে আটটি ইসলামী দল থাকবে। সেগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলন।

সূত্র জানায়, ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘নির্বাচনী সমঝোতা’ গড়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় জামায়াতে ইসলামী। সেক্ষেত্রে প্রতিটি আসনে একজন প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে ইসলামী আন্দোলনসহ ছয় দলের সঙ্গে আলোচনা করছে জামায়াত। তবে ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলন এককভাবে নির্বাচন করবে কি-না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পাশাপাশি ইসলামপন্থি একটি জোট বিএনপির সঙ্গেও সমঝোতায় যেতে পারে বলে আলোচনা আছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ ইসলামী দলগুলোকে একসঙ্গে দেখতে চাইছে। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’ তিনি বলেন, “ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আকিদাগত মতপার্থক্য থাকায় তারা এটিকে ‘ঐক্য’ না বলে ‘সমঝোতা’ বলছেন। এই সমঝোতা শুধু নির্বাচনের জন্য, যেখানে প্রতিটি আসনে একটি করে ইসলামী দলের প্রার্থী থাকবেন।’

কালের আলো/এইচএন/এমএএইচ