গৌরবময় ৫০ বছরে পিজিআর, নেতৃত্বের প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির 

প্রকাশিতঃ 5:30 pm | July 07, 2025

কালের আলো রিপোর্ট:

দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর)। যুগের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে অর্জন করেছে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিট পিজিআর সাফল্যের সঙ্গে পূর্ণ করেছে সুবর্ণজয়ন্তীর ৫০ বছর। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র, উন্নত প্রশিক্ষণ আর দৃঢ় মনোবলে সমৃদ্ধ চৌকস এই বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা এবং পেশাগত দক্ষতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি ভবিষ্যতেও নেতৃত্বের প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে যেতে বিশেষ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।

সোমবার (০৭ জুলাই) বিশেষায়িত এই বাহিনীর ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। শহীদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে পিজিআরের দরবারে এই অন্ষ্ঠুানের আয়োজন করা হয়। বাঙালি জাতির গর্বের সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত অংশ ও চৌকস সেনাবাহিনীর প্রতিচ্ছবি পিজিআর এর প্রশংসনীয় ভূমিকার সারি সারি চিত্রপটও তিনি তুলে ধরেন। এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি পিজিআর সদর দপ্তরে এসে পৌঁছলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম আরিকুল আলম তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করার পর পিজিআরের অফিসার ও জেসিওদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে তিনি শহিদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে আয়োজিত দরবারে অংশ নেন এবং উপস্থিত সদস্যদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পিজিআর-এর সুবর্ণ জয়ন্তীতে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং পিজিআরের পাঁচ শহীদ সদস্যসহ সকল প্রয়াত সৈনিকদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পিজিআর সদস্যদেরকে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, শৃঙ্খলা বজায় রাখা, আত্মোন্নয়নে মনোযোগী হতে এবং সর্বোপরি সৈনিক হিসেবে নিজের শারীরিক যোগ্যতাকে সর্বদা অক্ষুণ্ন রাখতেও উপদেশ দেন। তিনি পিজিআর এর ওপর অর্পিত দায়িত্ব একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অন্যদিকে গৌরবময় বলেও মনে করেন। ভবিষ্যতেও এই রেজিমেন্টকে আরও সুসংহত ও আধুনিক করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান। দায়িত্ববোধ, পেশাগত উৎকর্ষ, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে পিজিআর এর সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বেও ছড়িয়ে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি।

জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ করে গঠিত হয় প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর)। ‘নিñিদ্র নিরাপত্তাই গার্ডদের লক্ষ্য’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যরা দেশপ্রেমের শপথে বলিয়ান হয়ে সর্বদা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পেশাগত অনুশীলনের মাধ্যমে এই গার্ড রেজিমেন্ট আগামীতে আরও দক্ষতা অর্জন করবে। পিজিআর কালের পরিক্রমায় রাষ্ট্রীয় ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়, প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্যদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আজ একটি সুশৃঙ্খল ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। যার সদস্যরা প্রশ্নাতীত আনুগত্য, গভীর দেশপ্রেম ও প্রশংসনীয় পেশাগত দক্ষতা ও উচ্চ কর্তব্যবোধ নিয়ে দায়িত্ব পালনে সর্বস্তরে প্রশংসিত।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব খান মো.নুরুল আমীন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এমএএএমকে