এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আজ থেকে কলম বিরতি
প্রকাশিতঃ 9:57 am | June 23, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও এনবিআর সংস্কারে যৌক্তিক প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি এমন দাবি তুলে সোমবার (২৩ জুন) থেকে চার ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
গত ২১ জুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার ঢাকার সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এনবিআরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্ব-স্ব দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি পালন করবেন।
এদিকে, এনবিআরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতি চলার মধ্যে আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে ‘তাৎক্ষণিক বদলি’ করা হয়েছে। রোববার (২২ জুন) কর প্রসাশনের প্রথম সচিব মো. মোসাদ্দেক হাসানের স্বাক্ষরিত আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর মধ্যে দুজন আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের, একজন এনবিআর বোর্ড অফিসের এবং বাকি দুজন ঢাকা ও কুমিল্লার কর অঞ্চলের। এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে রোববার এ বদলির সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
কর প্রশাসনের আদেশে বলা হয়, উপ-কর কমিশনার শাহ্ মোহাম্মদ ফজলে এলাহীকে আয়কর গোয়েন্দা থেকে বদলি করে ময়মনসিংহ কর অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে।
উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলামকে ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ থেকে থেকে খুলনা কর অঞ্চলে এবং উপ-কর কমিশনার মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফকে বোর্ড থেকে সরিয়ে বদলি করা হয়েছে বগুড়া কর অঞ্চলে। উপ-কর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিলকে আয়কর গোয়েন্দা থেকে কুমিল্লা কর অঞ্চলে এবং উপ-কর কমিশনার নুসরাত জাহান শমীকে কুমিল্লা কর অঞ্চল থেকে রংপুর কর অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, তাদের নতুন কর্মস্থলে মঙ্গলবার বা তার আগেই যোগ দিতে হবে এবং সোমবার বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এর আগে গত মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকারের তরফে বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন।
পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তার বদলির আদেশকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে একে অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, এই বদলি কোনো স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি সুপরিকল্পিত কূটপরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ, যা চলমান রাজস্ব সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের পক্ষের শক্তিকে দুর্বল করার অপচেষ্টা।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের অংশগ্রহণ ছাড়া ফলপ্রসূ ও কার্যকর রাজস্ব সংস্কার নিশ্চিত করা যাবে না বলে সতর্ক করে সেই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের কোনো গ্রহণযোগ্যতা আমাদের পক্ষ থেকে কখনই স্বীকৃত হবে না।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, এনবিআর এর ঊর্ধ্বতন কর্তাদের এই ধরনের ফ্যাসিস্ট আচরণ আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করি।
কালের আলো/এএএন