বড় রদবদল : বিএমইউর একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে নতুন ২০ মুখ
প্রকাশিতঃ 7:09 pm | June 21, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) প্রশাসনিক কাঠামোয় বড় ধরনের রদবদল এসেছে। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট নতুন করে গঠন করা হয়েছে। এবারের পুনর্গঠনে একাডেমিক কাউন্সিলে ১২ জন এবং সিন্ডিকেটে ৮ জন– মোট ২০ জনকে নতুন সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে গত ১৯ জুন স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার উপসচিব রাহেলা রহমত উল্লাহ।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৮ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মনোনীত এসব সদস্যের মেয়াদ হবে দুই বছর। তবে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নতুন সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা স্বপদে বহাল থাকবেন।
নতুন এই একাডেমিক কাউন্সিল চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে। এতে তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১২ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে খ্যাতনামা চিকিৎসা বিজ্ঞানী ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছেন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যশিক্ষা বিষয়ক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের সিনিয়র অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ডা. এম মুজাহারুল হক।
অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সাকি মো. জাকিউল আলম, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল আলম খান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কেনান এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
এদিকে, বিএমইউর সিন্ডিকেটেও এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। চারটি ক্যাটাগরিতে নতুন করে আটজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হুরজাহান বানু এবং কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সিন্ডিকেটে জায়গা পেয়েছেন হেপাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নুরুদ্দীন আহমদ এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পথিকৃত ইনস্টিটিউট অব হেলথ স্টাডিজ’-এর অনারারি চিফ সায়েন্টিস্ট অ্যান্ড অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ডা. মো. লিয়াকত আলী।
একাডেমিক কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেট সদস্য হয়েছেন অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী। আর অধ্যক্ষ ক্যাটাগরি থেকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মাজহারুল শাহীন এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. ফয়সল আলম।
এ ছাড়া বিএমইউ আইন অনুযায়ী সিন্ডিকেটের স্থায়ী সদস্য হিসেবে থাকেন উপাচার্য, প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ, বিএমএ, বিএমডিসি ও বিএফইউজের সভাপতি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন পূর্ণকালীন সদস্য।
আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকার কমপক্ষে একজন নারীসহ তিনজন সংসদ সদস্যকে মনোনয়ন দেবেন সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে। এ ছাড়া নার্সিং অনুষদের ডিনসহ পালাক্রমে চার অনুষদের ডিন, সমাজকল্যাণ, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিনজন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ মনোনয়নক্রমে আরও কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপর্যায়ের এই রদবদলকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, চিকিৎসা শিক্ষার নীতিনির্ধারণ ও পরিচালনায় এই পুনর্গঠন নতুন গতিশীলতা আনবে এবং বিএমইউর প্রশাসন আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ হয়ে উঠবে।
কালের আলো/এসএকে