সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে অলস পড়ে আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি

প্রকাশিতঃ 9:56 am | April 28, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

অনেক স্বপ্ন নিয়ে দুই বছর আগে চালু হয় বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’। কিন্তু উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও নানা সংকটের কারণে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু হয়নি। এমনকি অলস পড়ে আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও।

অথচ পুরোদমে চালু হলে হাসপাতালটি থেকে বিশেষায়িত পাঁচটি সেবা পাবে জনগণ। সেসব সেবা নিতে দেশের মানুষকে যেতে হয় বিদেশ। কিডনি সেন্টার, হৃদরোগের সেন্টার, লিভারের সেন্টার, এক্সিডেন্টের সেন্টার এবং মা ও শিশু রোগের সেন্টার- এই পাঁচটি সেন্টারে বিশেষায়িত সেবা মিলবে।

জানা যায়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে পুরোদমে উন্নতমানের সেবা চালু করতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। হাসপাতালটি পুরোদমে চালু না হওয়ায় এসব যন্ত্রপাতি কোনো কাজে আসছে না। ব্যবহার না করায় সেগুলো অকেজো হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সেসব সেন্টার অল্প পরিসরে চালু রয়েছে, সেখানে স্বল্প আকারে ব্যবহার হচ্ছে যন্ত্রপাতি। এরমধ্যে লিভার সেন্টারে কার্যক্রম চালু রয়েছে, কার্ডিয়াক রোগীদের ক্যাথল্যাব চালু রয়েছে, ব্রেইনের রোগীদের কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে, মা ও শিশু ওটি হচ্ছে নিয়মিত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল সেবাই পাওয়া যাচ্ছে না সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে। এরমধ্যে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইত্যাদি বড় সেবা এখনো চালু হয়নি। সাথে পড়ে রয়েছে এসব রোগের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। ব্রেইন কেটে অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতিও এখনো ব্যবহার করা হয়নি।

জানা গেছে, হাসপাতালটির সব সংকটের মূলে রয়েছে জনবল সংকট। জনবল না থাকায় ৭০ শতাংশ যন্ত্রপাতি একদিনও ব্যবহার হয়নি। এসব যন্ত্রের মেয়াদ রয়েছে তিন বছরের কম-বেশি। ফলে ব্যবহারের আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক যন্ত্রের।

এদিকে যন্ত্রাংশ ত্রুটির দায় সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবর্তনেরও সুযোগ নেই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের ব্যবস্থা করলে আউটডোর ও ইনডোর সেবা পুরোপুরিভাবে চালু করা যাবে। তাতে সুফল ভোগ করবে দেশের মানুষ।

জানতে চাইলে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, ‘সব সংকটের মূলে রয়েছে নিয়োগ। লোকবল নিয়োগ দেওয়া গেলে সংকট কেটে যাবে, দেশের মানুষ পুরোপুরি সুফল ভোগ করতে পারবেন। আশা করি, এ বছরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। লোকবল না থাকলে যতই যন্ত্রপাতি থাকুক এই হাসপাতাল দাঁড়াবে না। এই হাসপাতালে সব জনবল এবং সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।’

কালের আলো/আরআই/এমকে