নিরাপত্তার কথা ভেবেই কারাগারে ভাগে ভাগে ভিআইপি বন্দীরা
প্রকাশিতঃ 7:39 am | October 02, 2024

রাইসুল ইসলাম খান, কালের আলো:
কারাগারে ডিভিশন সুবিধা পেয়েছেন ৪০ জনের বেশি ভিআইপি বন্দী। তাদের সবাইকে রাখা হয়েছে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে। এই তালিকায় আছেন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের আইজি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার, সম্প্রতি দায়িত্ব পালনকারী কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই ভিআইপি বন্দীদের সাধারণ বন্দীদের সঙ্গে রাখা হয়নি। কারণ সম্প্রতি তাদের কারাগার থেকে আদালতে নেওয়ার সময় তারা জনরোষের শিকার হয়েছে। সেই বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কয়েকটি পৃথক কক্ষে ভাগ করে তাদের রাখা হয়েছে।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-এলাহী, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, ডিএমপির সদ্য সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি ডিআইজি মশিউর রহমান, সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনসহ সব মিলিয়ে ৪০ জনের বেশি ভিআইপিকে এই কারাগারে রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এসব ভিআইপিরা কারাগারে বেশ বেকায়দায় আছেন। বাধ্য হয়ে তারা কারাগারের খাবার খাচ্ছেন। তাদের কাউকেই বাড়ি বা বাইরে থেকে আনা খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিআইপি বন্দী হলেও তারা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকা খাবারই খাচ্ছেন।
খাবারের তালিকায় রয়েছে-রুটি, পাউরুটি, চিনি, গুড়, ডাল, দুধ, জেলি, ডিম, ঘি, মাখন, কলা, চা, ভাত, মাছ বা মাংস, শাক-সবজি ও ডাল। অন্য বন্দীদের মতো সাধারণ খাবারই তারা খাচ্ছেন। এর বাইরে অনেকে কারা ক্যান্টিন থেকে নিজের টাকায় খাবার কিনেও খাচ্ছেন। তবে যাই দেওয়া হচ্ছে তা কয়েদি ও হাজতির খাবারের নিয়ম অনুযাযী তারা পাচ্ছেন। তবে যারা ডিভিশন পেয়েছেন তারা কারা বিধি অনুযায়ী যা যা পাওয়ার সবই পাচ্ছেন। সম্প্রতি কারাগারে থাকা কয়েকজন হালকা অসুস্থবোধ করলে তাদের চিকিৎসা করানো হয়েছে। এর বাইরে বড় ধরনের কারও কোনো অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি।
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী যারা ডিভিশন পাওয়ার তারা পেয়েছেন। এর বাইরে কয়েকজন ডিভিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আদালত সিদ্ধান্ত দিলে তারা তা পাবেন।
তিনি বলেন, কারাগারের যে খাবার তাই খাচ্ছেন ভিআইপি বন্দীরা। এর বাইরে বাড়তি খাবার কেউ নিতে চাইলে তা নিতে পারেন। আর বাহির থেকে তাদের বাসার রান্না করা কোনো খাবার খেতে দেয়া হচ্ছে না।
কারা সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দীরা একসঙ্গে থাকার কারণে গল্প-গুজব করেই সময় কাটাচ্ছেন। তাদের সেখানে সময় কাটাতে সেখানে দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিনের পত্রিকা। তবে এর বাইরেও জেলের নিয়ম অনুযায়ী তারা পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে নির্দিষ্ট সময়ে কথা বলতে পারছেন। কেউ কেউ গরুর মাংস, ঠান্ডা জাতীয় খাবার ও বেশি তরকারি চান বলে সূত্র জানিয়েছে। অনেকেই তাদের বাড়ির খাবারও খেতে চেয়েছেন। কিন্তু নিয়ম না থাকায় তাদের সেই অনুমতি মেলেনি।
কালের আলো/এমএএইচ/ইউএইচ