সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সেই ফ্লাইটের ২০ আরোহী আইসিইউতে
প্রকাশিতঃ 10:13 am | May 24, 2024

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী একটি ফ্লাইট মাঝ-আকাশে তীব্র-ঝাঁকুনির কবলে পড়ে। এতে অন্তত এক যাত্রী নিহত ও আরও অনেকে আহত হন
মাঝ-আকাশে তীব্র-ঝাঁকুনির কবলে পড়া সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী একটি ফ্লাইটের অন্তত এক যাত্রী নিহত ও আরও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যেই এখনও ২০ জন রয়েছেন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ)।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটটি গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছিল। পরে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাঝ-আকাশে তীব্র-ঝাঁকুনির কবলে পড়ার পর মঙ্গলবার ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সেই ফ্লাইটের আরোহী ২০ জন ব্যক্তি নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন বলে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ব্যাংককে সম্মিতিজ শ্রীনাকারিন হাসপাতালের পরিচালক আদিনুন কিত্তিরতানাপাইবুল বৃহস্পতিবার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে থাকা রোগীদের কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইসিইউতে থাকা রোগীর সংখ্যা একই রয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিইউতে থাকার অর্থ হলো ওইসব রোগীদের দিকে ঘনিষ্ঠ মনোযোগ থাকা প্রয়োজন।’
তবে বর্তমানে কোনও রোগীর জীবনই হুমকির মুখে নেই বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ফ্লাইটে থাকা ৪০ জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২২ রোগীর মেরুদণ্ডের আঘাত এবং ছয়জনের মস্তিষ্ক ও মাথার খুলিতে আঘাত রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা সবচেয়ে বয়স্ক রোগীর বয়স ৮৩ বছর এবং সবচেয়ে ছোট রোগী হচ্ছে দুই বছর বয়সী এক শিশু, সে জোরালো আঘাত পেয়েছে।
আদিনুন প্রথমে ৪১ জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। তবে পরে জানান, একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই ৪১ জনের মধ্যে দশজন ব্রিটিশ নাগরিক, ৯ জন অস্ট্রেলিয়ান, সাত জন মালয়েশিয়ান এবং চারজন ফিলিপাইনের নাগরিক।
চিকিৎসাধীন এসব ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন যাত্রী ও ক্রু রয়েছেন, সেই সংখ্যা আলাদা করে প্রকাশ করেননি তিনি।
উল্লেখ্য, লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ৩২১ ফ্লাইটটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। পরে মাঝ-আকাশে তীব্র বাতাসের কবলে পড়ে সেটি। এই ঘটনার পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটের পাইলট মঙ্গলবার ব্যাংককের দিকে বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করেন।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স জানায়, হিথরো বিমানবন্দর ছেড়ে আসা বিমানটি থাইল্যান্ডের স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৪টায় থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর জরুরি অবতরণ করে। কী ধরনের পরিস্থিতি এক যাত্রী নিহত ও অন্যান্যরা আহত হয়েছেন, সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স।
তবে বিমানের একজন যাত্রী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘যে যাত্রীরা সিটবেল্ট পরেননি, তাদের মাথা কেবিনের ওপরের অংশে আঘাত করেছে।’’
ফ্লাইটের গতিবিধি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোর জানায়, লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর বিমানটি আন্দামান সাগর অতিক্রম করে থাইল্যান্ডের আকাশসীমায় পৌঁছায়। থাই আকাশসীমায় থাকাকালীন মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৩৭ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে তীব্রগতিতে ৩১ হাজার ফুটে নেমে আসে ফ্লাইটটি।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা থেকে দেখা যাচ্ছে, এস কিউ ৩২১ ফ্লাইটটি যে উচ্চতায় ক্রুজ করছিল (‘ক্রুজিং অল্টিটিউড’), সেখান থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে হু হু করে অন্তত ৬০০০ ফিট (১৮০০ মিটার) নিচে নেমে আসে।
বিমানটি তখন সবেমাত্র বঙ্গোপসাগর অতিক্রম করে সিঙ্গাপুরের দিকে যাচ্ছিল।
কালের আলো/ডিএইচ/কেএ