রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি উদ্বোধন

প্রকাশিতঃ 11:53 am | October 19, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপনের কাজ উদ্বোধন হয়েছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ প্রকল্পের নির্মাণ সংস্থা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ৷

রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুমতি চান আলেক্সি লিখাচেভ৷

প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দেওয়ার পর রিঅ্যাক্টর ভবনে সেটি স্থাপন করা হয়৷ এ সময় রিঅ্যাক্টর ভবনে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর৷ ক্রেনের মাধ্যমে রিঅ্যাক্টরটি নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয়৷ এরপর জয়বংলা স্লোগান ধ্বনিত হয় সবার কণ্ঠে৷

এ রিঅ্যাক্টর স্থাপনের সার্বিক প্রস্তুতি এর আগেই সম্পন্ন করা হয়৷ রিঅ্যাক্টর স্থাপন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মাইলফলক অগ্রগতি। কারণ রিঅ্যাক্টর ভেসেলকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বলা হয়।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়৷ দেশের প্রথম এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরুর পরই বাংলাদেশ বিশ্ব পরমাণু ক্লাবের ৩১তম সদস্য হয়৷ পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থা (রআইএইএ) অনুমোদনে নিয়ে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর ইউনিয়নে রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয় বহুল প্রকল্প৷ শেখ হাসিনার সরকারের অগ্রাধীকার প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম। এ প্রকল্পে স্থাপন করা হলো রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি (প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিঅ্যাক্টর৷

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) প্রকৌশল শাখা অ্যাটমোস্ত্রয় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে৷ প্রতিটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এ প্রকল্পে৷ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির স্থায়িত্ব হবে ৬০ বছর৷ এরপর এটির মেয়াদ ২০ বছর বাড়িয়ে ৮০ বছর করা যাবে৷ পুনরায় এক্সটেশন করে আরও ২০ বছর বাড়ানোর ব্যবস্থা করা যাবে৷ সব মিলিয়ে দুই ধাপে ২০ বছর করে বাড়িয়ে মোট ১০০ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপানে থাকতে পারবে৷ এ প্রকল্পের লাইফ টাইম (পুরো সময়) জ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানি টিভিইএল৷ আগামী বছর অক্টোবরের মধ্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আসা শুরু হবে৷ জ্বালানি আনার দুই মাসের মধ্যে লোডিং করতে হবে৷

কালের আলো/ডিএস/এমএম