বিএনএসিডব্লিউসি’র ১৯ তম সভা, রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার
প্রকাশিতঃ 5:09 pm | October 02, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
শিল্পখাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে অবাধ ব্যবহার বাড়ছে রাসায়নিক কেমিক্যালের। সহজলভ্যতা থাকায় তৈরি হচ্ছে নানা কারখানা। অনেকক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় ঘটছে মারাত্মক সব দুর্ঘটনাও। ধ্বংস হচ্ছে বিপুল সম্পদ। ঘটছে বহু মানুষের প্রাণহানিও।
কঠিন এমন বাস্তবতায় সশস্ত্র বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশসহ দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সাড়াদানকারী সংস্থাসমূহের করণীয় এবং রাসায়নিক নিরাপত্তা সুসংহত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিএনএসিডব্লিউসি) চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
একই সঙ্গে বাংলাদেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ও তফসিল বহির্ভূত স্বতন্ত্র জৈব রাসায়নিক দ্রব্য সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়েছে।
রোববার (০২ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি) এর ১৯ তম সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসির চলমান কাজগুলো পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এই সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সভাপতিত্ব করেন। সভায় তিনি সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।

২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। পদাধিকারবলেই বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিএনএসিডব্লিউসি) চেয়ারম্যানও তিনি। নিজ দায়িত্বে আসীন হওয়ার পর করোনার সময় বিএনএসিডব্লিউসি’র দু’টি সভা ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এবারের ১৯ তম সাধারণ সভায় বিএনএসিডব্লিউসি’র সদস্যসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা এবং সশস্ত্র বাহিনী থেকে মোট ৪৫ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। সভায় বাংলাদেশে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (সিডব্লিউসি) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিএনএসিডব্লিউসির চলমান কাজগুলো পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
এছাড়াও বাংলাদেশের রাসায়নিক নিরাপত্তা সুসংহত ও রাসায়নিক দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার করণীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়। এই সভায় দুর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় বাহিনীসমূহের গঠিত বাংলাদেশে কেমিক্যাল ওয়ারফেয়ার এজেন্ট সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় সাড়াদানের জন্য এডহক কেমিক্যাল ডিজাস্টার রেসপন্স টিম (সিডিআরটি) গঠন ও এর ভূমিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় বলা হয়, ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ফলে দেশে রাসায়নিক দ্রব্যের আমদানি ও ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রাসায়নিক দুর্ঘটনার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে বন্দরে দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষিত রাসায়নিক দ্রব্যসমূহ ধ্বংসের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক সভাকে অবহিত করা হয়।
দেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যের আমদানি ও ব্যবহার আরো স্বচ্ছভাবে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি/ব্যবহারের সাথে জড়িত ও তফসিল বহির্ভূত স্বতন্ত্র জৈব রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে বিএনএসিডব্লিউসির সাথে নিবন্ধন জোরদার করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করতে শিগগিরই ওয়েব পোর্টাল উম্মুক্ত করা হবে বলে বিএনএসিডব্লিউসি জানায়।

কালের আলো/ডিএস/এমএম