কঙ্গোতে কৃষি কাজের ওপর দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

প্রকাশিতঃ 10:00 pm | September 24, 2022

ডেস্ক রিপোর্ট, কালের আলো:

যুদ্ধ বিধ্বস্ত কঙ্গোতে শান্তি রক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যান হেডকোয়ার্টার সাপোর্ট এন্ড সিগন্যাল কোম্পানী-১৭ এর উদ্যোগে বুনিয়া ইয়ুথ লিডার পার্লামেন্টের সদস্যদের কৃষি কাজের উপর দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে নর্দান সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মুহসিন আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রকার সবজির বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং স্টেশনারি সামগ্রী বিতরণ করেন এবং কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের পুরস্কৃত করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নর্দান সেক্টর কমান্ডার বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সামাজিক সম্প্রীতি ও সংহতি রক্ষায় যুব সম্প্রদায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে পারে। তারা যে কোন দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রদূত। প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান যথাযথভাবে প্রয়োগ করে তারা কৃষিতে যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, কঙ্গোতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে এসে লক্ষ্য করি, যুদ্ধ বিধ্বস্ত এই দেশে কৃষির ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। দেশের বেকার যুব সম্প্রদায়কে কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করলে খাদ্য ঘাটতি পুরণে এবং কৃষির বহুমূখীকরণের ক্ষেত্রে তারা এগিযে যেতে পারবে। যুব সম্প্রদায়কে উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করতে পারলে দেশে দ্রুত শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সবাইকে এক সাথে এগিয়ে নিয়েই কঙ্গোতে শান্তি ও উন্নতি আনতে হবে। যুব সম্প্রদায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হলেই তারা সম্মানজনক জীবন-যাপন করতে পারবে। তারা কৃষিকাজ করে নিজের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে ও অংশগ্রহন করতে পারে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মুহসিন আলম বলেন, এসব উদ্দেশ্য সামনে রেখে আমরা বুনিয়া এলাকার যুব সম্প্রদায়ের সদস্যদের কৃষি কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। কঙ্গোতে প্রচুর অনাবাদী উর্বর পতিত জমি রয়েছে, এর যথাযথ ব্যবহার করলে দেশ কৃষি ও অর্থনীতিতে সাবলম্বী ও সমৃদ্ধ হবে। আমাদের এই প্রচেষ্টা কঙ্গোতে শান্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে সাহায্য করবে। এছাড়াও নর্দান সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মুহসিন আলম, এনডিসি, পিএসসি, প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী ছাত্রদের কর্তৃক প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রস্তুতকৃত বীজতলা ও সবজি বাগান পরিদর্শন করেন এবং তাদের একাগ্রতা ও কর্মস্পৃহার প্রশংসা করেন। পরিশেষে, নর্দান সেক্টর কমান্ডার চাষাবাদের প্রশিক্ষণের এই কার্যক্রম আরো বেগবান করে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে দেওয়া জন্য উপস্থিত সকলকে উদাত্ত আহবান জানান।

প্রসঙ্গত, যুব সম্প্রদায়ের ৫০ জন সদস্যদের বাংলাদেশি কন্টিনজেন্ট (BAN HQ SP & SIG COY/17) কর্তৃক দুই সপ্তাহব্যাপী (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ হতে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত) কৃষি কাজে সক্ষম করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জমি তৈরী, বীজবপন, চারা উৎপাদন, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, বীজ সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ লদ্ধ জ্ঞান ব্যবহার করে প্রশিক্ষণার্থীরা নিজস্ব জমিতে চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার উদ্দেশ্যেই অত্র কন্টিনজেন্ট এই ক্ষুদ্র প্রয়াস গ্রহণ করে।

এছাড়া ইতোমধ্যে ব্যান হেডকোয়ার্টার সাপোর্ট এন্ড সিগন্যাল কোম্পানী-১৭ কর্তৃক এধরনের আরও কয়েকটি কৃষি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে ইতুরি প্রদেশ তথা বুনিয়া অঞ্চলের বিরাট সংখ্যক স্থানীয় জনগনকে কৃষি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীদের এ ধরণের উদ্যোগ এখানকার সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। শান্তিরক্ষী ও স্থানীয় জনগনের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর হয়েছে। শান্তিরক্ষীদের প্রতি জনগনের ইতিবাচক মনোভাব তৈরীতে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলছে।

কালের আলো/এসবি/এমএম