বাসে ডাকাতির প্রতিবাদ করায় ধর্ষণের শিকার তরুণী

প্রকাশিতঃ 7:55 pm | August 08, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

টাঙ্গাইলে যাত্রীবেশে উঠে চলন্ত বাসে ডাকাতির পর এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় বাসের হেলপার রতন হোসেনসহ ১০ কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাবের দাবি, ডাকাতির সময় ওই তরুণী একমাত্র প্রতিবাদ করেছিলেন। যার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে ডাকাতরা কয়েকজন মিলে তরুণীকে ধর্ষণ করে।

র‌্যাব জানিয়েছে, চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন। রতন দিনে বাসচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করলেও রাতে যুক্ত হতেন ডাকাতির কাজে। এর আগেও ১০টি বাসে ডাকাতির নেতৃত্ব দেন রতন। গ্রেফতার হয়ে কারাভোগও করেছেন।

সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

টাঙ্গাইল ও মধুপুরে বারবার ডাকাতি হচ্ছে, এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতির ঘটনায় আমরা আমাদের দায় এড়াতে পারি না। পাশাপাশি রাতে মহাসড়ক থেকে বাসে যাত্রী তোলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীরা অস্ত্রশস্ত্র ব্যাগে নিয়ে বাসে উঠছে, কিন্তু তাদের চেকআপ ছাড়াই বাসে ওঠানো হচ্ছে। বাসের সুপারভাইজার, হেলপার কিংবা চালক টাকার লোভে টিকিট ছাড়া রাস্তা থেকে যাত্রী তুলছেন। এ বিষয়ে সবাই যদি সতর্ক থাকা যায় তবে ডাকাতির ঘটনা কমে আসবে।

‘কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চলে আসতো বা বামে যদি সিসি ক্যামেরা থাকতো তাহলে ডাকাতি অনেকাংশে কমে আসতো’ যোগ করেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতার রতন এর আগে ১০টি বাসে ডাকাতি করেছে। তবে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের মতো ঘটনা এর আগে কোনো বাসে করেনি বলে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে। তবে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি পরে জানা যাবে।

গ্রেফতারদের মধ্যে কে কে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে শ্লীলতাহানির সঙ্গে কারা জড়িত ছিল।

মোবাইল ও মেয়েদের অলংকার উদ্ধার করলেও যাত্রীদের খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করতে পারেনি র‌্যাব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন গাড়িতে ডাকাতির সময় ভাগাভাগি নিয়ে ডাকাতদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এরপর টাঙ্গাইলের একটি বাসায় গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী ডাকাতরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। নগদ অর্থ পেয়ে ডাকাতরা খরচ করে। এতে করে নগদ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কত টাকা ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়েছিল সেটিও প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।

স্ক্যান ছাড়া বাসে যাত্রী নেওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যদি কোনো যাত্রী বোমা নিয়ে বাসে ওঠে তাহলে সেটি বাসে থাকা সব যাত্রীর জন্য বিপজ্জনক।

কালের আলো/বিএস/এমএ