ভালোবাসাময় জয়নুল উদ্যান

প্রকাশিতঃ 10:03 pm | February 14, 2019

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

লাল রঙের শাড়ি পরেছে মেয়েরা। খোঁপায় রক্তরাঙা লাল গোলাপ। ছেলেদের গায়ে সফেদ পাঞ্জাবি, চোখে সানগ্লাস। তবে সবার হাতেই একটি বা দু’টি করে লাল গোলাপ। সঙ্গে খোশ গল্প, আড্ডা আর মিষ্টি খুনসুটি।

ক্ষণে ক্ষণে সেলফি তোলা। প্রেমিক যুগলরা নিজেদের সঙ্গে যেন বেঁধেছে নিজেদের প্রাণ। সবার ঠোঁটেই সেই মধুর উচ্চারণ-ভালোবাসি। দিকে দিকে ছড়িয়েছে উচ্ছ্বাস।

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার রঙে পুড়ে উৎসবে মেতেছে ময়মনসিংহ। এজন্য ভালোবাসাময় তীর্থ জয়নুল উদ্যানে ছুটেছে সবাই। এখানে ছিলো রীতিমতো জনস্রোত!

বিপুল উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা নিয়ে প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন যুগলরা। অবস্থা এমন যেন বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিনমান ময়মনসিংহ শহরের সব পথ মিশে গিয়েছিল ব্রক্ষপুত্র নদঘেঁষা জয়নুল উদ্যানে।

ভালোবাসা দিবসই শুধু নয় অন্য যেকোন উৎসবে শহরের বাসিন্দাদের তীর্থ হয়ে উঠেছে জয়নুল উদ্যান। এই উদ্যানের পাশ দিয়েই বয়ে চলা মরুময় ব্রক্ষপুত্র নদে নৌকা নিয়ে নদের ওপারে হারিয়ে যাওয়া। দুই পাড়েই সংখ্যাতীত মানুষের উপস্থিতিতে ছিল মুখরিত।

সকাল-সন্ধ্যা এই মিলনমেলা বছরের অন্য দিনগুলোতেও যে থাকে না বিষয়টি তেমন নয় মোটেও। তবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিনটি অন্য যেকোন দিনের চেয়ে স্বভাবতই ব্যতিক্রম।

ভালোবাসা যে কেবল প্রেমিকার প্রতি প্রেমিকের তা নয়। সন্তানের প্রতি মা-বাবা’র ভালোবাসাও চিরন্তন। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোবাসা দিবসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। এই উদ্যানে সবুজ শ্যামল ছায়াপথের পাশাপাশি শিশুদের জন্য রয়েছে চিড়িয়াখানা।

নান্দনিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি আছে ফোয়ারা, ব্যায়ামাগার। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে স্পেশাল রাইড। প্রতি বছরই এ উদ্যানে শিশুদের জন্য নতুন নতুন রাইড স্থাপনের কাজ করছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন।

প্রিয়জনকে ফুল বা শুভেচ্ছা কার্ড দিয়ে ভালোবাসা দিবসের জন্য উইশ করতেও দেখা গেলো উদ্যানের কোথাও কোথাও। আবার তাদের সঙ্গে আসা ছোট ছোট মেয়েরা যেন একেকজন ছোট লাল পরী।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যুগল তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি খানিকটা কম হলেও বিকেল গড়াতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। অবস্থা দেখে মনে হলো ভালোবাসা শব্দটিই যেন প্রত্যেকের হৃদয়ে খোদাই করে লেখা।

পহেলা ফাল্গুনের উচ্ছ্বাসের ঠিক দ্বিতীয় দিনেই ভালোবাসা দিবসের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে শহরের জয়নুল উদ্যান ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বোটানিক্যাল গার্ডেন, বিপিন পার্ক এবং শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে।

এদিন দেশি-বিদেশি খাবারের দোকানগুলোতে তিল ধারণেরও ঠাঁই ছিলো না। অন্য দিনের চেয়ে এদিন দ্বিগুণ ব্যবসা হয়েছে বলে জানালেন পার্ক সারিন্দা রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার। তার ভাষ্যে, ভালোবাসা দিবসে কফি, জুস, লাচ্চি এই জাতীয় খাবার বিক্রি হচ্ছে বেশি।

তরুণ-তরুণীরা জানান, ঘুরাঘুরির ফাঁকে ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে নিয়ে জমিয়ে না খেলে পূর্ণতা আসে না। তাই একবার অন্তত এদিনটিতে রেস্টুরেন্টে ঢুঁ দিতেই হবে।

কালের আলো/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email