‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে’

প্রকাশিতঃ 6:32 pm | February 21, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল, এটা অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না। অথচ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, বিজাতীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা রুখে দিয়েছিলো তৎকালীন ছাত্রসমাজ। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা। ভাষা মানুষের পরিচয়। এ পরিচয় মানুষকে সম্মানিত করে। আমরা রক্ত দিয়ে সেই সম্মান অর্জন করেছি। এটা আমাদের গৌরবময় অর্জন।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান ও ‘মাতৃভাষা পদক ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্ররা। তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই উদ্যোগে তমদ্দুন মজলিশসহ কয়েকটি সংগঠন ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে। তিনি এ আন্দোলন করতে গিয়েই কারাবরণ করেন। অথচ ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল, এটা অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না। অথচ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, একটা ভাষা মানুষের পরিচয়। এই পরিচয়টা আমাদের সম্মান এনে দেয়। এজন্য আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। রক্ত দিয়ে লিখেছি ভাষার অক্ষর। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘মাতৃভাষা আন্দোলনে বাঙালিরাই প্রথম রক্ত দিল। দুনিয়ার কোথাও ভাষা আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যার নজির নেই।’ সত্যিকারার্থেই ভাষার অধিকারের জন্য কেউ এত রক্ত দেয়নি। এই ভাষার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। সেই সংগ্রামের হাত ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের এই গৌরব সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছি। ভাষার অধিকার, পৃথিবীর সব হারিয়ে যাওয়া ভাষা সংরক্ষণ ও ভাষা গবেষণার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। এখানে ভাষা জাদুঘর করা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান।

তিনি বলেন, ভাষার সংরক্ষণ, বিকাশ ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের জন্য পদক দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। আজ থেকে এ পদক চালু হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভাষার মাসে গুণীজন ও ভাষার প্রতি সম্মান জানাতে পারলাম, এটা আমাদের সৌভাগ্য।

নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিনজন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠান এ বছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’পেয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ে মাতৃভাষার সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও বিকাশে অবদানের জন্য ২০২১ সালে জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ পুরস্কার পেয়েছেন।

কালের আলো/ইআকে/এএ