করোনার টিকা নিলেন প্রধান বিচারপতি-মন্ত্রী-সচিব-মেয়র

প্রকাশিতঃ 8:22 pm | February 07, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশে ব্যাপক উৎসাহের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধনের পরপরই টিকা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিচারপতি, মন্ত্রী, সচিব ও জনপ্রতিনিধি।

রোববার(০৭ জুলাই) সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে সারা দেশে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।

সস্ত্রীক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন করোনার টিকা নিয়েছেন। এছাড়া আপিল বিভাগের ৭ জন এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৪৮ জন বিচারপতি সহ ৫৫ জন বিচারপতি টিকা নিয়েছেন।

এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আজ আমার স্ত্রীসহ ভ্যাকসিন নিয়েছি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত হলো আপিল বিভাগ। আজ দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের আমিসহ সাত বিচারপতি ভ্যাকসিন নিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগের ৪০ জন বিচারপতিও ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সুতরাং, আমি দেশবাসীকে বলবো, সবাই যেন তাড়াতাড়ি নিবন্ধন করেন এবং ভ্যাকসিন নেন।’

তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সবার আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, এটি প্রধানমন্ত্রীর বিশাল কৃতিত্ব।’

অন্যদিকে মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের টিকা নেওয়ার পর কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। এছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও টিকা নিয়েছেন।

টিকা নেওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা দেওয়ার পর প্রায় ৩০ মিনিট আমরা সবাই একসাথে বসে কথা বললাম। আমাদের কারো শরীরেই কোনরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সবাই সুস্থ আছি। কাজেই আজ থেকে দেশব্যাপী যে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করা হলো তাতে দেশের সকল শ্রেণির মানুষই ভ্যাকসিন গ্রহণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসবে বলে আমরা আশাবাদী। এরপর ভ্যাকসিন নিয়ে কোনরকম মিথ্যা গুজব সৃষ্টি করা হলে সেক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

সচিবদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এছাড়া, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ঢাকা সিএমএইচে টিকা গ্রহণ করেন।

টিকা গ্রহণ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তিন বন্ধু বিদেশে থাকেন। তারা ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ। তারা আমাকে অভয় দিয়েছেন। আমার টিকা নিতে কোনো ভয় নেই। আমার কোনো সমস্যা হয়নি। যার যার সম্ভব টিকা নেয়া উচিত। দেশের ৭০ শতাংশ লোক টিকা নিলে করোনাভাইরাস আর ছড়াবে না।’

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক টিকা নিয়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন (টিকা) প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন ক‌রে‌ন। ময়মনসিংহে প্রথম করোনার টিকা নিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু।

মসিক মেয়র করোনা টিকা নেওয়ার পর মেডিকেল কলেজের অন্যান্য বুথগুলো পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তীতে ময়মনসিংহ সিএমএইচে স্থাপিত অপর টিকাদান কেন্দ্রে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। 

করোনা টিকা নেওয়ার পর মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু বলেন, করোনা মহামারীর শুরু থেকেই আমরা ভ্যাক্সিনের জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা দ্রুততম সময়ে করোনা টিকা নিতে পারছি। 

তিনি আরো বলেন, করোনা টিকাদান কার্যক্রমকে সফল করার স্বার্থে সকল বিভ্রান্তিকে দূরে রেখে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। 

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে এমপি, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবী, সচেতন নাগরিকরা টিকা নিয়েছেন।

রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে তারা করোনার টিকা নিয়েছেন। এদিন সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান শুরু হয়।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ