পাগলা মসজিদে দান এখন অনলাইনে, ডোনেশন সাইটের উদ্বোধন
প্রকাশিতঃ 3:35 pm | July 04, 2025

কিশোরগঞ্জ প্রতিবেদক, কালের আলো:
এখন থেকে ঘরে বসেই দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশ থেকেও অনলাইনে দান করা যাবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১১টায় মসজিদের চত্বরে এ অনলাইন ডোনেশন সাইটের উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাগলা মসজিদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছে। অনেকেই দান করতে চাইলেও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম না থাকায় দান করতে পারছিলেন না। এসব বিষয় মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অনলাইনে নিরাপদভাবে দান করা যাবে। পাগলা মসজিদের অনলাইন দানের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইট হলো: www.paglamosque.org। সাইটটিতে গিয়ে সহজেই দেশ-বিদেশের যে কেউ তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করতে পারবেন।
পাগলা মসজিদে দান নিয়ে রয়েছে নানা কাহিনি ও বিশ্বাস। প্রচলিত রয়েছে, এখানে দান করলে মনবাসনা পূরণ হয়। তাই দেশ-বিদেশের মানুষ নির্দ্বিধায় দান করেন এই মসজিদে। বছরে চারবার খোলা হয় দানসিন্দুক, আর প্রতিবারই বেরিয়ে আসে বিপুল পরিমাণ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজবে রহমত, জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক রমজান আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি আলমগীর হোসেন তালুকদার, জামিয়া এমদাদিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশিদ, বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন দিলু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইয়াজ ইবনে জসিম এবং পাগলা মসজিদের খতিব প্রমুখ।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১২ এপ্রিল খোলা হয় দানসিন্দুক। ওই সময় মসজিদের ১১টি সিন্দুক থেকে রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়, যা দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দানের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ বলে দাবি করা হচ্ছে।
পাগলা মসজিদের ব্যয় এবং সেবামূলক কার্যক্রমের জন্য ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে এই অর্থ। জানা গেছে, বর্তমানে মসজিদের ফান্ডে রয়েছে প্রায় ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ২৬৩ টাকা।
মসজিদ কমিটি জানায়, এই অর্থ ব্যবহার করা হয় ধর্মীয়, শিক্ষা ও জনকল্যাণমূলক কাজে।
এই উদ্যোগ শুধুমাত্র মসজিদের আর্থিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ নয়, বরং এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পথে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
কালের আলো/এমডিএইচ