শরীরে শক্তি কমলেও ভোটে ক্লান্তি নেই রেনুজা বেগমের
প্রকাশিতঃ 8:35 pm | February 01, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
হুইল চেয়ারে বসে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন ৮৫ বছর বয়সী রেনুজা বেগম। সঙ্গী মেয়ে শামীমা আক্তার লাকী। তাদের বাড়ি স্থানীয় নূরজাহান রোডে। দীর্ঘদিন পর নিজের এলাকায় ভোট নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই তার মাঝে। জীবনভর ভোট দিয়েছেন নৌকা প্রতীকে।
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় গার্লস স্কুলের ভোটকেন্দ্রে এসে পৌঁছতেই তাকে ঘিরে তৈরি হয় জটলা। হুইল চেয়ারে বসেই এগিয়ে যান বুথের দিকে।
কেমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন প্রশ্ন করতেই ঠোঁটে কম্পন তুলে রত্নগর্ভা এই নারী বললেন, ‘সারা জীবন নৌকায় ভোট দিয়েছি; বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই।
এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই ভোট দিবো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ উপহার দিচ্ছেন। আমার ভোটও উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার প্রতীকেই যাবে।’
ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে রেনুজা বেগমের চোখে-মুখে যেন তৃপ্তির ছাপ। তার কাছে নৌকা উন্নয়নের প্রতীক। আর ভোট তার কাছে প্রধান নাগরিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন থেকে তিনি বঞ্চিত হতে চান না।
বয়স হার মানানো এই বৃদ্ধা বলেন, ‘অনেক দিন পর ভোট দিলাম। অনেক খুশি লাগছে। আরো খুশি লাগবে শেখের বেটির প্রার্থী পাস করলে।’
ডিএনসিসির নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বিএনপি’র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
আর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। তিনি যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি।

রেনুজা বেগমের নাতি আসিফ আহমেদ পাশের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। নিজের নাতি জনরায়ে বিজয়মাল্য পড়বেন এমন অভিমতও জানান রেনুজা বেগম। শরীরের শক্তি কমে এলেও মানসিকভাবে বেশ শক্তই মনে হলো এ অশীতিপর বৃদ্ধাকে।
আঙ্গুলের ছাপ দেখিয়ে উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করেন রেনুজা বেগম। ভোট দিয়ে আলাহ’র কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। বলেন, ‘অনেকবার আল্লাহ ভোট দেওয়ার সৌভাগ্য দিয়েছেন।
এবারও যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিতে পেরেছি। খুশি হবে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী জয়ী হলে।’
রেনুজা বেগমের পাশেই থাকা মেয়ে শামীমা আক্তার লাকীও মনে করেন, ‘পছন্দের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার ভোট। গালভরা হাসি দিয়ে বলেন, ‘এতো বছর পর ভোট এসেছে। না দিতে পারলে কীভাবে চলবে?
তাই দেরী না করে মাকে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসেছি। মা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ ছিলেন। নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ভোট উৎসবে পূর্ণতা পেয়েছে।’
দেখা গেছে, উৎসাহ নিয়েই সকাল থেকেই অনেক বয়স্ক মানুষ ভোট দিতে এসেছেন। তারা কেউ রিকশায়, কেউ হেঁটে, কেউ নাতি বা ছেলের কোলে চড়ে এসেছিলেন ভোটকেন্দ্রে।
ভোট দিয়ে মুখায়বে তৃপ্তির আভা ছড়িয়ে চটজলদি বাড়িও ফিরছেন। ভোট তাদের প্রধান নাগরিক দায়িত্ব হওয়ায় বার্ধক্য তাদের ভোট দেবার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
নতুন জনপ্রতিনিধির কাছে নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তারা বলেন, নতুন জনপ্রতিনিধি এলাকায় উন্নয়ন করবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল রাখবে। যেসব ওয়াদা করছিল ইলেকশনের আগে সেই ওয়াদা মাফিক কাজ করবে।
কালের আলো/এসএ/এমএ