ভোটারদের মনজয়ে আসিফ, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ‘নীল নকশা’ আহমাদ আলীর

প্রকাশিতঃ 7:09 pm | January 27, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

নানা সমস্যায় জর্জরিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড। মাদকের ভয়াল ছোবলে এখানে আক্রান্ত তরুণরা। সন্ত্রাস, ময়লা-আবর্জনা ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা থেকে মিলছে না মুক্তি।

ভাল নেই এখানকার বসিলা, কাটাশুরসহ বিভিন্ন বস্তির নিম্ন আয়ের মানুষজন। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও পানির সমস্যা তাদের নিত্যসঙ্গী।

গরিব এসব মানুষজনের ভাগ্য পরিবর্তনে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আসিফ আহমেদ। বস্তির গরিব দুস্থদের পাশাপাশি ওয়ার্ডের সাধারণ বাসিন্দাদের ভাগ্য বদলে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তরুণ এই সমাজসেবক।

সুশৃঙ্খল প্রচারণায় ভোটাদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। তাঁর প্রচারণায় ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। কিন্তু এই উৎসব দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। নিমিষেই উবে যাচ্ছে ওয়ার্ডটিতে বিএনপি’র মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী এসএম আহমাদ আলী’র (টিফিন ক্যারিয়ার) ‘নীল নকশায়’।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তরুণ প্রার্থী আসিফ আহমেদ যেখানে ভোটাদের দৃষ্টি আকর্ষণে বাস্তবধর্মী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সেখানে ভোটের মাঠে কালো টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর ‘ছক’ কষছেন।

আর এই বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় হারাম হয়ে গেছে নগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের শান্তির ঘুম।

নির্বাচনের আর মাত্র চারদিন বাকী থাকলেও চিহ্নিত ওই চক্রটি ভোটের মাঠে কালো টাকা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আসিফের ক্যানভাসেও সুকৌশলে বহিরাগতদের ব্যবহার করছেন। ওই বহিরাগত ক্যাডার-সন্ত্রাসীরা ভোটারদের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে ‘আজ্ঞাবহ’ আচরণ করছে।

এ নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে ‘রাইট ট্র্যাকে’ কুলিয়ে উঠতে না পেরে ‘ব্যাক ডোর’ পলিটিক্সের মাধ্যমে নানামুখী কূটকৌশল শুরু করেছেন বিএনপি’র প্রার্থী।

ভোটের পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে যেখানে শাসক দলের প্রার্থী ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বজায় রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সেখানে বিএনপি’র একাধিক বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামি টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের এসএম আহমাদ আলী নেতিবাচক প্রভাব বলয় তৈরি করেছেন ভোটের মাঠে।

এসব বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে জোয়ার উঠলেও শুরু থেকেই সক্রিয় প্রচারণা চালাননি বিএনপি’র প্রার্থী আহমাদ আলী।

ভোটকে বিতর্কিত করতেই স্থানীয় বস্তির গরিব ভোটারদের টার্গেট করে বহিরাগত ক্যাডার-সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছেন।

তাদের ধারণা ‘ব্যাক ডোর’ গেইমের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠলেই সংঘর্ষ বাঁধবে। আর তখন মাঠের পরিবেশ ভোটের অনুকূল নয়, এমন দাবি করে নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিবেন বিএনপি’র এই প্রার্থী ও তাদের লোকজন।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি’র প্রার্থীর আচরণ রহস্যময়। কিন্তু সাধারণ ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা চান।

যারা কালো টাকা ছড়িয়ে ভোটের মাঠকে প্রভাবিত করতে চান আগামী ০১ ফেব্রুয়ারির ভোটে তাদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত শান্তিপূর্ণ ভোটাররা।

৮ মামলার আসামি বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থী
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থী এসএম আহমাদ আলী বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরকসহ ৮ টি মামলার আসামি।

মোহাম্মদপুর থানার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বছিলা গার্ডেন সিটির এই বাসিন্দার বিরুদ্ধে থাকা এসব মামলার একটি তালিকা কালের আলো’র হাতে এসেছে। আহমাদ আলী এসব মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

এসব মামলাসমূহ হচ্ছে- মোহাম্মদপুর থানার এফআইআর নং-৩/১৩০৭, তারিখ-০১ নভেম্বর ২০১৮, ধারা- ১৫(৩)/২৫-ডি ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। একই থানার এফআইআর নং-১৫৭/১২৮০, তারিখ-২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ধারা- ১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন।

মোহাম্মদপুর থানার এফআইআর নং-১৩১/১২৫৪, তারিখ-২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ধারা- ১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন, একই থানার এফআইআর নং-১০৮/১২৩১, তারিখ-১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ধারা-৩/৫/৬ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন।

মোহাম্মদপুর থানার এফআইআর নং-১০৭/১২৩০, তারিখ-১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ধারা- ১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। একই থানার এফআইআর নং-৯২/১২১৫, তারিখ-১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ধারা-১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন।

মোহাম্মদপুর থানার এফআইআর নং-৯০/১২১৩, তারিখ-১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ধারা- ১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। একই থানার এফআইআর নং-৬৫/১১৮৮, তারিখ-১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ধারা-১৫(৩) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন।

কালের আলো/সিএইচ/আরআর