দেশের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশিতঃ 10:09 am | July 06, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে চীনে তার ৫ দিনের সরকারি সফর শেষে তিনি আজ শনিবার(৬ জুলাই) দেশে ফিরছেন।

শনিবার (৬ জুলাই) স্থানীয় সময় ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইট বেইজিং বিমানবন্দর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান চীনের সহ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুয়ো ঝাওহুই, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময় অপরাহ্নের পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণের কথা রয়েছে।

চীন সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট জিং জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগদান করেন এবং ‘কো-অপারেশন ইন দি প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারকে বোঝানোর বিষয়ে ঢাকাকে আশ্বস্ত করে বেইজিং।

দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সমস্যা দ্রুত সমাধানের বিষয়ে বৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে একমত পোষণ করে চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এটা (রোহিঙ্গা সমস্যা) বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা।’

তিনি এ সমস্যা দ্বিপাক্ষিক সমাধানের পক্ষে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করে, এ বিষয়ে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বেইজিংয়ে অবস্থানকালীন কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার (সিপিসি) মিনিস্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সঙ্গ তায়োর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সিপিসি মিনিস্টার প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সমস্যাটি সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচি এবং মিয়ানমারের অন্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার দলের আলোচনার বিষয়ে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্থ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে ঢাকা এবং বেইজিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ৯টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ৪ জুলাই চীনা প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন সিপিসির কার্যালয় গ্রেট হল অব দ্যা পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিংয়াংয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়।

যার মধ্যে রয়েছে- রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য এলওসি (লেটার অব এক্সচেঞ্জ) এবং অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি এবং পর্যটন-সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য সাহায্য-সংক্রান্ত এলওসির আওতায় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য চীন ২,৫০০ টন চাল সরবরাহ করবে বলে পররাষ্ট্র সচিব জানান।

ডব্লিউইএফের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াব এবং বিভিন্ন চীনা কোম্পানির সিইওদের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং তিয়েনআনমেন স্কয়ারে চীনা বিপ্লবের বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শেখ হাসিনা গত ১ জুলাই ৫ দিনের সরকারি সফরে ঢাকা থেকে চীনে পৌঁছেন।

কালের আলো/এনএ/এমএম