শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ৯ জনের ফাঁসির রায়

প্রকাশিতঃ 12:34 pm | July 03, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একই ঘটনায় ২৫ জনের যাবজ্জীবন ও ১৩ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার(৩ জুলাই) দুপুর ১২টায় এ রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুস্তম আলী। তবে তাৎক্ষণিক সাজাপ্রাপ্তদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এদিকে মামলার রায়ের আগে পলাতকদের মধ্যে হুকুমদাতাসহ আরও দু’জন মঙ্গলবার (০২ জুলাই) আত্মসমর্পণ করেন। তারা হলেন- ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম টেনু।

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তিনি জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার নথি অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাংগঠনিক সফরে খুলনা থেকে রাজশাহী অভিমুখে ট্রেনযোগে রওয়ানা হন। পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশনে ছিল পথসভা। ট্রেনটি পাকশী স্টেশনে পৌঁছার পরপরই ব্যাপক গুলি ও বোমা হামলা চালানো হয়। পরে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ওইদিনই তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমান ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। কিন্তু বিএনপি সরকারের আমলে তদন্ত আর আগায়নি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি পুনঃতদন্ত করে পুলিশ। তখন ঈশ্বরদী বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ মোট ৫২ জনকে আসামি করা হয়। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল এদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়ার ২১ বছর পর এই মামলার নিষ্পত্তি হলো। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারে তার তিনটি মেয়াদ শেষ করে চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। মাঝে বিএনপি-জামায়াত জোট একবার এবং প্রায় দুই বছর ছিল সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ছয় বছর পর দেশে ফেরা তার বড় কন্যা শেখ হাসিনাকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ বার হত্যাচেষ্টার কথা জানা গেছে। এর মধ্যে ১৪টি ঘটনায় মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনটি মামলায় এখন পর্যন্ত রায় হয়েছে। বাকিগুলোর কোনো কোনোটির তদন্তের অগ্রগতিই জানাতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রায় ঘোষণার সময় ৫২ আসামির মধ্যে ৩০ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।

কালের আলো/এআর/এনএল