টাইগারদের ৩১৫ রানের টার্গেট দিল ভারত

প্রকাশিতঃ 7:37 pm | July 02, 2019

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

টাইগারদের বিপক্ষে ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৩১৪ রান। বাংলাদেশকে জয়ের জন্যে করতে হবে ৩১৫ রান।

সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ওপেনার রোহিত শর্মা। ফিফটির দেখা পান আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল। কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান নিয়েছেন চারটি উইকেট।

গ্রুপ পর্বে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি ম্যাচে হেরেছে কোহলির দল। পয়েন্ট টেবিলে আছে দুই নম্বরে। আর বাংলাদেশ সাত ম্যাচে পেয়েছে ৭ পয়েন্ট। ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায়।

ওপেনিংয়ে নামেন রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১৮০ রান। বোলিংয়ে এসে নিজের তৃতীয় ও ইনিংসের ৩০তম ওভারে রোহিত শর্মাকে আউট করেন সৌম্য সরকার। সৌম্যের অফকাটারে এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে ক্যাচ নেন লিটন দাস। আউট হওয়ার আগে রোহিত শর্মা দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে সংগ্রহ করেন ১০৪ রান। ৯২ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও পাঁচটি ছক্কা। ম্যাচের ৫ম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে রোহিত শর্মার (৯) ক্যাচ ফেলে দেন তামিম ইকবাল। এর পরে এই ওপেনার আর পিছু ফিরে তাকাননি। বাংলাদেশের বোলারদের সাবলীলভাবে খেলে নিজের ২৬তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত শর্মা।

দলীয় ১৯৫ রানের মাথায় বিদায় নেন আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল। রুবেল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। তার আগে ৯২ বলে ছয়টি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৭৭ রান। দলীয় ২৩৭ রানের মাথায় বিদায় নেন দলপতি বিরাট কোহলি। ইনিংসের ৩৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে মিড উইকেটে রুবেলের হাতে ধরা পড়েন আগের পাঁচ ইনিংসে টানা ফিফটি প্লাস ইনিংস খেলা কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে ২৭ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে কোহলি করেন ২৬ রান। এক বল পরেই বিদায় নেন হার্দিক পান্ডিয়া। একই ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ফিজ।

এরপর ইনিংস টেনে নিতে থাকেন রিশব পান্ত এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। দলীয় ৪৫তম ওভারের প্রথম বলে সাকিব ফিরিয়ে দেন রিশবকে। ৪১ বলে ছয়টি চার আর একটি ছক্কায় ৪৮ রান করে মোসাদ্দেকের তালুবন্দি হন রিশব পান্ত। সাকিব নিজের শেষ ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেট পান। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে মোস্তাফিজ ফিরিয়ে দেন দীনেশ কার্তিককে। ব্যক্তিগত ৮ রানে ফিজের অফকাটারে কাটা পড়েন কার্তিক, ক্যাচ তুলে দেন মোসাদ্দেকের হাতে। দলীয় ২৯৮ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় ভারত। শেষ ওভারে মোস্তাফিজ তুলে নেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। সাকিবের হাতে ধরা পড়ার আগে ধোনি ৩৩ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ৩৫ রান। শেষ ওভারে রানআউট হন ভুবনেশ্বর কুমার। শেষ বলে মোস্তাফিজ বোল্ড করেন বুমরাহকে।

সাকিব ১০ ওভারে ৪১ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। মোসাদ্দেক হোসেন ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সৌম্য সরকার ৬ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। রুবেল হোসেন ৮ ওভারে ৪৮ রানে নেন একটি উইকেট। মাশরাফি ৫ ওভারে ৩৬ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। সাইফউদ্দিন ৭ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ৫৯ রানে তুলে নেন পাঁচটি উইকেট।

এই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গায় একাদশে এসেছেন সাব্বির রহমান। আর মেহেদি হাসান মিরাজের জায়গায় একাদশে এসেছেন পেসার রুবেল হোসেন। রুবেল এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচ খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৯ ওভারে ৮৩ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এদিকে, ভারতের একাদশে এসেছেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার এবং দীনেশ কার্তিক। বাদ পড়েছেন স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং কেদার যাদব।

এবারের বিশ্বকাপে ভারতের উড়ন্ত সূচনা, অন্যদিকে সেমির টিকিট কাটতে কঠিন সমীকরণে হাঁটতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিশ্বকাপে খেলা সাত ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে ভারত, একটিতে হার আর এক ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত। অন্যদিকে ভারতের সমান সাত ম্যাচ খেলে টাইগারদের তিন জয়ের বিপরীতে তিন পরাজয় আর একটি পরিত্যক্ত।

বিশ্বকাপে সমীকরণ যা দাঁড়িয়েছে তাতে মাশরাফিরা হেরে গেলে আদতেই ক্ষতি। ওদিকে কোহলিরাও খুব একটা স্বস্তিতে নেই। ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শেষ চারের পথ নিশ্চিত করতে পারেনি ভারত। বাংলাদেশের কাছে হেরে গেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠবে বাঁচা-মরার। ফলে ভারতও চাইবে শেষ-চার নিশ্চিত করতে। বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬২ রানে জিতেছিল। অন্যদিকে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক ইংলিশদের কাছে ৩১ রানে হেরেছে ভারত।

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, রুবেল হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং সাব্বির রহমান।

ভারত একাদশ: বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা (সহ-অধিনায়ক), রিশব পান্ত, মহেন্দ্র সিং ধোনি (উইকেটরক্ষক), দীনেশ কার্তিক, লোকেশ রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, মোহাম্মদ শামি এবং যুভেন্দ্র চাহাল।

কালের আলো/এনএল/এমএম

Print Friendly, PDF & Email