সেই মিন্নি ও খুনি নয়নের বিয়ের খবর ফাঁসে তোলপাড়
প্রকাশিতঃ 7:54 pm | June 28, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
রিফাত শরীফকে বিয়ে করার আগে খুনি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ডকেও বিয়ে করেছিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। এমন খবর ফাঁস করেছেন বরগুনা পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্টার আনিসুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁর সরল স্বীকারোক্তিতে এ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সেই বিয়ের ডকুমেন্টসও দিয়েছেন।
তবে নৃশংসভাবে খুন হওয়া রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দাবি করেছেন, একদিন অস্ত্রের মুখে নয়ন তাকে জিম্মি করে একটি বাসায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে বসে একটি কাগজে তাঁর স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে সেই স্বাক্ষর দিয়ে নয়ন কী করেছে বিষয়টি আর জানেন না তিনি।
বরগুনা পৌরসভার ডিকেপি রোডের কেজি স্কুল নামক স্ট্যান্ডে নিকাহ রেজিস্টার আনিসুর রহমান ভূঁইয়ার কাজী অফিস। এ নিকাহ রেজিস্টার গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গত বছরের ১৫ অক্টোবর আছরের নামাজের পর বিয়ে করার জন্য নয়ন ও মিন্নিসহ ১৫ থেকে ২০ জন লোক আসে আমার অফিসে। এসময় নয়ন ও মিন্নি তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার প্রমাণস্বরূপ এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে আসে।
এরপর আমি মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা জানতে চাইলে তারা বলে, মেয়ের বাবা আসবে না, আপনি মেয়ের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর মিন্নির মা পরিচয়ে একজন আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি আমাকে বলেন, বিয়ের বিষয়টি আমরাতো জানি। মিন্নির বাবা বিয়েটা এখন মানবে না। আপনি বিয়ে সম্পন্ন করেন।

বিয়ের কিছুদিন পর ঠিকই মেনে নেবেন। এরপর আমি ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে নয়ন ও মিন্নির বিয়ে সম্পন্ন করি। এ বিয়ের উকিল ছিলেন শাওন নামের একজন। শাওন ডিকেপি রোডের মো. জালাল আহমেদের ছেলে। আর বিয়ের প্রথম স্বাক্ষী ছিলেন রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডের দ্বিতীয় আসামি বাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজি।
এদিকে, নৃশংস এ হত্যাকান্ডের পর দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গোটা দেশের মানুষ খুনি নয়ন বন্ডকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তবে হত্যাকান্ডের পর পরই নয়ন-মিন্নি’র কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিগুলোতে দু’জনের ঘনিষ্ঠতারই প্রমাণ পাওয়া যায়।

তবে এ বিষয়ে আলোচিত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, নয়ন আমাকে হুমকি দিত এবং অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখাত। আমার ভাই কলেজ রোড এলাকার একটি স্কুলে পড়ে। নয়ন আমার স্কুল পড়ুয়া ভাই এবং বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, নয়ন আমার বাবাকেও বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিত। একদিন অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে একটি বাসায় নিয়ে যায় নয়ন। পরে সেখানে বসে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয় সে। তবে সেই স্বাক্ষর দিয়ে নয়ন কিছু করেছে কি-না আমি জানি না।
যারা আমার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই, যোগ করেন মিন্নি।
কালের আলো/ওএইচ/এএ