দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, ৩০টি ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিতঃ 8:55 pm | June 16, 2025

সিলেট প্রতিবেদক, কালের আলো:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভের ঘটনার দুই দিনের মাথায় সিলেটে পাথর ভাঙার ক্রাশার মিলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন।

সোমবার (১৬ জুন) সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকায় সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পরিচালিত এক অভিযানে ৩০টি পাথর ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স। এতে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরিনা দেব নাথ।

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেরিনা দেব নাথ বলেন, অবৈধভাবে পরিচালিত পাথর ভাঙার মিলগুলোর বিরুদ্ধে এই অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ধোপাগুল এলাকায় ৩০টি মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে।

এর আগে শনিবার (১৪ জুন) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। সেখানে তারা সরেজমিনে পাথর উত্তোলন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের অবস্থা পর্যালোচনা করেন।

পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের পরিবেশ, পর্যটন এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেটের নান্দনিক এলাকাগুলোতে পাথর উত্তোলনের জন্য আর কোনো ইজারা দেওয়া হবে না।

জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন,পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও এখনো ক্রাশারে পাথর ভাঙা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই পাথরগুলো আসছে কোথা থেকে? প্রশাসন বলছে, এগুলো আমদানিকৃত। তাহলে সেগুলো বন্দরে থাকার কথা, এখানে কেন? তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে ক্রাশার মিলগুলোর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

উপদেষ্টাদের এসব মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা। উপদেষ্টারা এলাকা ত্যাগের সময় শ্রমিকরা তাদের গাড়িবহরের গতিরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ ঘটনার পরদিন রোববার (১৫ জুন) রাতে গোয়াইনঘাট থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়, যাতে ১৫৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পরদিনই শুরু হয় প্রশাসনের অভিযান। ধোপাগুল এলাকায় প্রথম ধাপে ৩০টি পাথর ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আরও মিলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

কালের আলো/এমডিএইচ