বিদেশিদের তাঁবেদারি করতে করিডর, বন্দর খেলায় মেতেছে সরকার : রাশেদ খাঁন

প্রকাশিতঃ 8:33 pm | May 27, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিদেশিদের তাঁবেদারি করতে করিডর, বন্দর দেওয়ার খেলায় মেতেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৪টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা; সংস্কার ও বাস্তবতা নিয়ে পেশাজীবীদের ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদ।

রাশেদ খাঁন বলেন, সবকিছু সঠিকভাবে করার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সংস্কার জরুরি। কিন্তু সরকারের সেদিকে মনোযোগ নেই। সরকার বিদেশিদের তাঁবেদারি করতে করিডর, বন্দর দেওয়ার খেলায় মেতেছে। আবার বিনিয়োগ আসবে, রোহিঙ্গা ফেরত যাবে কত কথার ফুলঝুরি। যতটুকু  বাস্তবায়ন করতে পারবেন, ততটুকু স্বপ্ন দেখান। অতিরিক্ত স্বপ্ন দেখিয়ে বাস্তবায়ন না করতে পারলে জাতি হতাশ হবে। আমরা কেউ বলি নাই,  সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন দিয়ে দেন। তবে একটার সঙ্গে আরেকটা মুখোমুখি করবেন না।

তিনি বলেন, সরকারকে বলতে চাই জাতীয় সংলাপ যাতে চা নাস্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কী সিদ্ধান্ত নিলেন, তা জাতিকে জানান। নতুবা এই সংলাপ ব্যর্থ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা নিয়ে এতো গড়িমসি কেন? জাতিকে অন্ধকারে রেখে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সংস্কার করা যায় না। সংস্কারের জন্য স্বচ্ছতা ও পরিকল্পনা লাগে। ১০ মাসে কি সংস্কার করলেন? পদত্যাগের নামে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে। নতুবা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন কীভাবে একটি রাজনৈতিক দলের নেতার মুখ থেকে শুনতে হয়?

রাশেদ খাঁন আরও বলেন, কেন তিনি পদত্যাগ করবেন? তার পদত্যাগ কি কেউ চেয়েছে?  বরং এই জাতি তাকে সম্মানিত করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়া বাকিদের পারফরম্যান্স তো দেখি না? এই অযোগ্য উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে টিম জেতা যাবে না। প্রধান উপদেষ্টা মাঝেমধ্যে ৪ বা ৬ মারছে। জাতির মধ্যে এতে নতুন উন্মাদনা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু দেখলাম তো বাকিদের ১০ মাসের ব্যর্থতা। এভাবে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন কোনোটাই সঠিকভাবে হবে না।

সভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে। আমরা সংস্কার, বিচারের এবং নির্বাচনের বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে চাই। গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি গণহত্যার মামলার অনেক আসামি ইতোমধ্যে জামিন পেয়েছে, এটা শঙ্কার বিষয়। তারা এভাবে জামিন পেলে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিপদ আসতে পারে । এমনকি আবার নতুন করে গণহত্যাও চালাতে পারে।

তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় বিগত সময়ে আমরা দেখেছি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কিংস পার্টি গঠন করা হতো। বর্তমানে কিছু উপদেষ্টার কাজে মনে হচ্ছে তারাও এনসিপিকে কিংস পার্টি হিসেবে রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসছে। সেজন্য তারা গণমাধ্যমকে ব্যবহার করছে। এনসিপির রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নেই, মার্কা নেই, কোনো ঘোষণা পত্র নেই, নেই কোনো দলীয় গঠনতন্ত্র। এমনকি কোনো জেলায় কমিটি নেই, কোনো জেলায় ৫০০ লোক নিয়ে একটি সমাবেশও করতে পারেনি । অথচ সরকারের বিশেষ মহল গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে এই দলকে একটি ফ্যাক্টর হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি ডেন্টিস্ট জাফর মাহমুদ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক লতিফ মাসুম, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ড. ইমরান হোসাইন, ড. অ্যাডভোকেট মোহা. শরিফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মেহেদি হাসান, মনিরুল মাওলা, জি এম রোকোনুজ্জামান, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পী, মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আবির আহমেদ সবুজ প্রমুখ।

কালের আলো/এসএকে