সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমুদ্রে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ 9:56 pm | April 12, 2025

কালের আলো রিপোর্ট:

সবার হাতে উড়েছে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা। কারও কারও মাথায় বাঁধা ছিল ফিলিস্তিন, বাংলাদেশ বা কালেমা খচিত সাদা পতাকা। সব মিছিলের স্রোত এসে মিলিত হয় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সারা দেশ থেকে মিছিল আসে ট্রেনে, বাসে কিংবা ট্রাকে। ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে রীতিমতো জনসমুদ্রে পরিণত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট’ বাংলাদেশের আয়োজনে এই কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকা মিছিলের শহরে রূপ নিয়েছিল। ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে হাজার হাজার মানুষ মিছিল অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গণজমায়েতের মঞ্চে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, লেবার পার্টি, ইসলামি দলসহ দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিতি হয়। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সব দল-মত-নির্বিশেষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে নামে জনতার ঢল। এ যেন ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ।

এ সময় তারা ‘গাজাবাসীর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘ইসরায়েলের পণ্য, বয়কট বয়কট’, ‘ফিলিস্তিনে আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘জিহাদ জিহাদ চাই, জিহাদ করে বাঁচতে চাই’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীর প্রতিটি পথ।

পরে এদিন বিকেলে ফিলিস্তিনের জন্য ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোনাজাত করেন লক্ষাধিক মানুষ। মোনাজাতে তারা ফিলিস্তিনের মুক্তি চেয়েছেন। বিকেল ৪টা নাগাদ মোনাজাত শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররমের খতিব ও মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালেক। মোনাজাতে তিনি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি কবুল করে নেওয়ার কথা বলেন। ফিলিস্তিনের মুক্তি চেয়ে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান তোলেন মাওলানা মামুনুল হক, জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ একাধিকজন। মোনাজাতের আগে মঞ্চে থেকে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার মজলুম সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

  • এক মঞ্চে সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা
  • ‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা
  • আমাদের একজনের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন : মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেকেই আসেন বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে। এসবের মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনের প্রতি নিজেদের সমর্থন এবং ইসরায়েলের প্রতি নিজেদের ঘৃণা প্রকাশ করেন। অনেকেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক স্লোগান দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর পল্টন মোড়, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, শিক্ষা ভবন হয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে এবং চানখারপুল থেকে সরাসরি দোয়েল চত্বর দিয়ে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যেতে থাকে অংশগ্রহণকারীরা। এছাড়া বাংলামোটর থেকে আসা মিছিল শাহবাগ হয়ে রমনা গেট দিয়ে কাকরাইল মোড় হয়ে আসা মিছিল মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট গেট দিয়ে, বকশীবাজার মোড় দিয়ে আসা মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি গেট দিয়ে এবং নীলক্ষেত মোড় দিয়ে আসা মিছিল ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসি গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়।

এর আগে সকালেই পূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য। দুপুরের পর মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার ও বক্তা ড.মিজানুর রহমান আজহারী, শায়খ আহমাদুল্লাহ, কারী আহমাদ ইবনে ইউসুফ আজহারী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এসময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হক, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক কায়েম, অ্যাক্টিভিস্ট সাইমুম সাদি, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বদিকে একটি স্টেজ করা হয়। টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে একদল জনতা ফিলিস্তিনের পতাকা এবং বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের অনেকেই নিজের মাথায় ফিলিস্তিনের পতাকা বেধে আসেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্ট দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা জনতা মিছিল করে সেখানে যেতে থাকেন।

‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা
লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে পালিত হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করা হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মালেক। তাঁর মোনাজাতের মাধ্যমে অল্প সময়ে সম্পন্ন হয় গণজমায়েত। অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক অতিথি উপস্থিত থাকলেও কেউই বক্তব্যের সুযোগ পাননি। লিখিত ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা সবার বক্তব্য বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

মাহমুদুর রহমানের পাঠ করা ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামাটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম। আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরাক্রমশালী, যিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী, যিনি মজলুমের পাশে থাকেন, আর জালেমের পরিণতি নির্ধারণ করেন।

আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা-যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি-সমবেত হয়েছি গাজার মৃত্যুভয়হীন জনগণের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এই সমাবেশ কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসের সামনে দেওয়া আমাদের জবাব, একটি অঙ্গীকার, একটি শপথ।

এই পদযাত্রা ও গণজমায়েত থেকে আজ আমরা চারটি স্তরে আমাদের দাবিসমূহ উপস্থাপন করব-
আমাদের প্রথম দাবিগুলো জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি। যেহেতু-জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সকল জাতির অধিকার রক্ষার, দখলদারিত্ব ও গণহত্যা রোধের সংকল্প প্রকাশ করে; এবং-আমরা দেখেছি, গাযায় প্রতিদিন যে রক্তপাত, যে ধ্বংস চলছে, তা কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়-বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার ফল; এবং-এই ব্যর্থতা শুধু নীরবতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-বরং পশ্চিমা শক্তিবলয়ের অনেক রাষ্ট্র সরাসরি দখলদার ইজরায়েলকে অস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে এই গণহত্যাকে দীর্ঘস্থায়ী করেছে; এবং-এই বিশ্বব্যবস্থা দখলদার ইজরায়েলকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে বরং রক্ষা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে; সেহেতু আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

এবং-গাযা আমাদের জন্য এক আয়না-যেখানে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে বিশ্বাসী হওয়া মানে কেবল বেঁচে থাকা নয়, সংগ্রামে দৃঢ় থাকা; সেহেতু আমরা এই মাটির মানুষ, এই মুসলিম ভূখণ্ডের নাগরিক, এই কওমের সন্তান এবং সর্বোপরি মুসলিম উম্মাহর সদস্য-একটি অঙ্গীকার করছি:

১.আমরা সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বয়কট করবো-প্রত্যেক সেই পণ্য, কোম্পানি ও শক্তিকে যারা ইজরায়েলের দখলদারিত্বকে টিকিয়ে রাখে;
২. আমরা আমাদের সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করবো-যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সকল প্রতীক ও নিদর্শনকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করবে, ইনশাআল্লাহ;
৩. আমরা আমাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলবো-যারা নিজেদের আদর্শ ও ভূখণ্ড রক্ষায় জান ও মালের সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত থাকবে;
৪. আমরা বিভাজিত হবো না-কারণ আমরা জানি, বিভক্ত জনগণকে দখল করতে দেরি হয় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো, যাতে এই বাংলাদেশ কখনো কোনো হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের পরবর্তী গাজায় পরিণত না হয়। আমরা শুরু করবো নিজেদের ঘর থেকে-ভাষা, ইতিহাস, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সমাজ-সবখানে এই অঙ্গীকারের ছাপ রেখে। আমরা মনে রাখবো: গাযার শহীদরা কেবল আমাদের দোয়া চান না-তাঁরা আমাদের প্রস্তুতি চান।

শেষকথা:
শান্তি বর্ষিত হোক গাযার সম্মানিত অধিবাসীদের উপর-তাঁদের উপর, যাঁরা নজিরবিহীন সবর করেছেন, যাঁরা অবিচল ঈমানের প্রমাণ দিয়েছেন। যাঁরা ধ্বংসস্তূপের মাঝেও প্রতিরোধের আগুন জ্বেলেছেন। বিশ্বের নীরবতা ও উদাসীনতার যন্ত্রণা হাসিমুখে বুকের মাঝে ধারণ করেছেন। শান্তি বর্ষিত হোক তাদের উপর, যাঁরা নাম রেখে গেছেন ইজ্জতের খতিয়ানে- শান্তি বর্ষিত হোক হিন্দ রজব, রীম এবং ফাদি আবু সালেহ সহ সকল শহীদেরর উপর, যাঁদের রক্ত দ্বারা গাজার পবিত্রভূমি আরো পবিত্র হয়েছে, যাঁদের চোখে ছিল প্রতিরোধের অগ্নিশিখা।

শান্তি বর্ষিত হোক বাইতুল মাকদিসের গর্বিত অধিবাসীদের উপর, যাঁদের হৃদয়ে এখনো ধ্বনিত হয় ‘আল-কুদস লানা’, আল কুদস আমাদের! গাজার জনগণকে অভিনন্দন- আপনারা ঈমান, সবর আর কুরবানীর মহাকাব্য রচনা করেছেন। দুনিয়াকে দেখিয়েছেন-ঈমান আর তাওয়াক্কুলের শক্তি আমরা, বাংলাদেশের মানুষ-শাহ জালাল আর শরীয়াতুল্লাহর ভূমি থেকে দাঁড়িয়ে, আপনাদের সালাম জানাই, আপনাদের শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই, আর আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় এই দো’আ-হে আল্লাহ, গাজার এই সাহসী জনপদকে তুমি সেই পাথর বানিয়ে দাও, যার উপর গিয়ে ভেঙে পড়বে জায়োনিস্টদের সব ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে, প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ।

আমাদের একজনের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন : মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল বাহিনীর বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে অভূতপূর্ব প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশের মানুষ। লাখ লাখ জনতার অংশগ্রহণে পালিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। সেখানে জনসমুদ্রে স্লোগান তুলেছেন জনপ্রিয় বক্তা ও ইসলামিক স্কলার মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। গাজায় মুসলিম ভাইয়েরা কেন শহীদ হচ্ছে, এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে জবাব চেয়েছেন তিনি। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতের শুরুতেই মাইকে আসেন মাওলানা আজহারী। লাখ লাখ বিশৃঙ্খল জনতাকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় মিজানুর রহমান আজহারী স্লোগান তোলেন। ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, আমার ভাই শহীদ কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’— এই স্লোগানে মুখরিত হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আজহারী বলেন, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, আল কুদুস, আল কুদুস, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।’

শুরুতেই তিনি বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আমাকে শান্ত করার জন্য বলা হয়েছে, আপনারা কী শান্ত হবেন, না অশান্ত হয়ে যাবেন? মার্চ করতে গিয়ে লাথি গুঁতা সব খেয়েছি, তারপরও আজকের এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণ জমায়েতে জনতার মহা সমুদ্রে উপস্থিত হয়ে বুঝতে পেরেছি, আজকের এই মহাসমুদ্র, গণসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। এই গণসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের একজনের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন।’

কালের আলো/এমএএইচএন