জঙ্গি হামলায় এবা’র মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই ক্রাইস্টচার্চে হামলা?

প্রকাশিতঃ 6:05 pm | March 15, 2019

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

নিউজিল্যন্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদসহ দুই জায়গায় ভয়াবহ হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৯ জন। এ ঘটনায় ভাগ্যজোরে বেঁচে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ব্রেন্টন টেরেন্ট (২৮) নামধারী ওই হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন শহরের অধিবাসী ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক।

নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলেও দাবি করা ব্রেন্টন টেরেন্ট কেন এই হামলা চালিয়েছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা। মেনোফেস্টোতে সে নিজেকে একজন ‘সাধারণ শ্বেতাঙ্গ লোক’ বলে উল্লেখ করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার কিছু গণমাধ্যম বলছে, ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল সুইডেনের স্টকহোম শহরে জঙ্গিদের ট্রাক চাপায় হতাহতের ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই নাকি টেরেন্ট এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এই ধারণার পেছনে হামলাকারীর রাইফেল লেখা কিছু শব্দ যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে নিউজ ডট কম এইউ, টাইমস নাও এর মতো মিডিয়াগুলো।

টেরেন্টে যে রাইফেল নিয়ে এই হামলা চালান, সেটার গায়ে কিছু শব্দ লেখা ছিল। হামলার ভিডিওতে যে শব্দগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেগুলো হলো, ‘ To take revenge for Ebba Akerlund’। এবা আকারলাউন্ড নামের ১২ বছরের সুইডিশ মেয়েটি ছিল শ্রবণ প্রতিবন্ধী । স্কুল থেকে ফেরার পথে সে স্টকহোমের সেই ট্রাকচাপায় সে প্রাণ হারায়। এবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই টেরেন্ট ক্রাইস্টচার্চে হামলা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া, হামলার আগে ব্রেন্টন টেরেন্ট টুইটারে ‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ শিরোনামে ৮৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ একটি মেনোফেস্টো প্রকাশ করে।

ট্যারেন্টের ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টের হেডার ফটো হিসেবে যে ছবি রয়েছে, সেখানে ২০১৬ সালে ফ্রান্সের নিসে শহরে বাস্তিল ডে উদযাপন অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত একজনের ছবি দেখা যায়। সেদিন জনতার ওপর ট্রাক চালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৮৪ জনের প্রাণহানি হয়।

এই ভয়াবহ হামলা চালানোর জন্য দুই বছর ধরে পরিকল্পনা করছিল জানিয়ে ট্যারেন্ট তার মেনিফেস্টোতে বলে, তিন মাস আগেই সে ক্রাইস্টচার্চে হামলার সিদ্ধান্ত নেয়।

হামলাকারী তার মেনিফেস্টোতে অভিবাসীদের দিকে ইঙ্গিত করে উল্লেখ করে, ‘ঐতিহাসিকভাবে ইউরোপের ভূমিতে বিদেশি ‘দখলদার’দের কারণে শত শত মানুষের মৃত্যুর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘দখলদার’দের ওপর এই হামলা চালানো হচ্ছে।’

মেনিফেস্টোতে সে আরও বলে, ‘২০১৭ সালে সুইডেনের স্টকহোমে সন্ত্রাসী হামলায় ১১ বছর বয়সী শিশু এব্বা অকারলান্ডের নিহত হওয়ার ঘটনার শোধ নিতে এই হামলাটি চালানো হয়েছে। স্টকহোমের ওই ঘটনাটিই আমাকে প্রথম এ ধরনের হামলার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, বিশেষ করে ওই ১১ বছর বয়সী মেয়েটির মৃত্যু। এব্বার মৃত্যু হয়েছে ‘দখলদার’দের হাতে…আমি এ ধরনের হামলা এড়িয়ে যেতে পারি না।’

ফ্রান্সের নিসে শহরের ঘটনাটিও তাকে হামলায় প্রেরণা যুগিয়েছে বলে মেনিফেস্টোতে উল্লেখ করে ট্যারেন্ট।

শুক্রবারের বর্বরোচিত এই হামলায় এ পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই বাংলাদেশিও রয়েছেন। নৃশংস হামলাটির নিন্দা জানিয়েছে স্তম্ভিত বিশ্ববাসী।

কালের আলো/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email