‘জয় বাংলা’ স্লোগানের একাল-সেকাল নিয়ে হৃদয়গ্রোথিত উচ্চারণ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী’র

প্রকাশিতঃ 9:07 pm | May 04, 2024

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণ করে ১৯৭১-এর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের জনসভা শেষ করেন। এই ভাষণের পর থেকে এটি সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

বাঙালির ভাগ্য গঠনে চেতনা, ঐক্য, দেশপ্রেম ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক এ স্লোগানের একাল-সেকাল নিয়ে এবার বিস্তারিত আলোকপাত করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি। দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে তিনি বলেছেন, ‘জয় বাংলা আমাদের স্বাধীনতার স্লোগান, জয় বাংলা আমাদের জন্মের স্লোগান। জয় বাংলা আমার হৃদয়ের স্লোগান।’ শনিবার (০৪ মে) ঢাকার কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে ‘নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন’ এর ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও উদ্যোক্তা মহাসম্মেলন এবং ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবার ও পণ্য মেলা-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাঙালির চিরন্তন এ স্লোগানের বিষয়ে তিনি এ কথা বলেন।

পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের নির্মম শোষণ, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের লড়াইয়ে এই আইকনিক স্লোগানটি অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করেছিল বলেও দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন টানা দ্বিতীয়বার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া অভিজ্ঞ এ রাজনীতিক। মন্ত্রীর বলিষ্ঠ কন্ঠে ওঠে আসে ১৯৯৬ সালের ভোট রাজনীতির চরম বাস্তব ইতিহাস।

সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন নির্বাচন করি তখন আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলেছিল, ‘জয় বাংলা’ না বলতে। আমি বুঝতাম কেন আমাকে ‘জয় বাংলা’ বলতে নিষেধ করে। দেশ স্বাধীনের পরে ২১ বছর টেলিভিশনে শুনি নাই। ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর এলে বঙ্গবন্ধুর কথা বলা হতো না। স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, মা-বোন যারা জীবন দিয়েছেন তাদের কথা শুনতে পেতাম না। যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, তাদের কথা শুনতে পেতাম আর তাদের চেহারা টেলিভিশনে দেখতাম। তখন নিজেকে আত্মপ্রতারক মনে হতো। তখন দুঃখ হতো, মনে হতো কবে একটা দিন আসবে, কবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনব। তখন আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলতো, জয় বাংলা বললে ভোট কমে যাবে আমার। তখন দুঃখ নিয়ে কখনো জয় বাংলা বলতাম আবার বলতাম না।’

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, ‘আজকে সাহস নিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলি। স্বাধীনতার সময় আমি নিজে দেখেছি মা-বোনদের গুলি করে হত্যা করতে। বাড়িতে আগুন লাগিয়ে মানুষদের মারতে। তখন চাকরি, শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে জিন্দাবাদ বলে আমাদের সাথে বৈষম্য করা হতো। স্বাধীনতার সময় আমরা স্লোগান দিতাম—জিন্দাবাদে লাথি মারো, জয় বাংলা কায়েম করো। এই স্লোগান দিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছে। জয় বাংলা আমাদের স্বাধীনতার স্লোগান, জয় বাংলা আমাদের জন্মের স্লোগন। জয় বাংলা আমার হৃদয়ের স্লোগান। আজকে টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর কথা দেখতে পারি। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের দেশটা স্বাধীন হয়েছে, তাদের প্রতি সম্মান না দেখানোর কোনো সুযোগ নাই’-যোগ করেন তিনি।

কালের আলো/এমএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email