জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দিলো ইসরায়েল
প্রকাশিতঃ 11:01 am | November 22, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। সে সময় প্রায় ২০০ ইসরায়েলি নাগরিককে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়। এরপরেই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশিই শিশু। গাজার চারদিকে অবস্থান করছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে সেখানকার সাধারণ মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই শত শত মানুষ হতাহত হচ্ছে। এর মধ্যেই খাবার, বিদ্যুৎ এবং পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।
এর মধ্যেই হামাসের সঙ্গে একটি বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, আগামী চার দিনে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে এ প্রস্তাবের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বা ওয়ার ক্যাবিনেট। চুক্তি অনুযায়ী, জিম্মিদের কয়েক ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৩০ জিম্মির মুক্তির শর্তারোপ করা হয়েছে। এছাড়া চুক্তিতে চার থেকে পাঁচ দিনের সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা রয়েছেন।
হামাসের এই হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।
যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছিল, তাদের জিম্মায় প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি রয়েছে। তবে পরে হামাস ঘোষণা করে, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার কারণে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জিম্মি।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে। প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে তা হবে এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট।
কালের আলো/ডিএস/এমএম