প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে নৌবাহিনী যুগোপযোগী ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে : নৌবাহিনী প্রধান

প্রকাশিতঃ 9:33 pm | November 20, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘জাতির পিতার নির্দেশিত পথে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, অসামান্য প্রজ্ঞা, সুগভীর বিচক্ষণতা ও সঠিক নির্দেশনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী বর্তমানে একটি যুগোপযোগী ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণীতে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসে ২১ নভেম্বর একটি গৌরবময় আলোকিত দিবস। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় বীর সেনানীরা দেশের আপামর জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বরে জল, স্থল ও আকাশ পথে সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য আক্রমণের সূচনা করে। অদম্য এই আক্রমণের ফলশ্রুতিতে পাক হানাদার বাহিনী পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয় এবং বিশ্ব মানচিত্রে ফুটে উঠে স্বাধীন বাংলাদেশের নাম।’

তিনি বলেন, ‘আজকের এই উজ্জ্বলতম দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালি জাতির পথ প্রর্দশক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি আরো স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের সেই সব অকুতোভয় বীর শহিদদের, যাঁদের অসামান্য দেশপ্রেম ও মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।’

এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘২১ নভেম্বর’ সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি নাগরিকের অন্তরে আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা যোগায়, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে দেশমাতৃকার অগ্রযাত্রায় পথিকৃত হয়ে কাজ করে থাকে। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবং বাংলার মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ তাদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছিলো, আজ তারা একই অনুপ্রেরণায় সেই স্বাধীনতা জীবন দিয়ে রক্ষা করার জন্য সদা জাগ্রত। বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে ধ্বনি আজও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের জন্য অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনার সর্বোত্তম উৎস হিসেবে পরিগণিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমুদ্রসীমার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে সাবমেরিন ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, মেরিটাইম প‌্যাট্রল এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার ও আধুনিক সামরিক সরঞ্জামাদি। সরকার কর্তৃক অর্জিত বিশাল সমুদ্র এলাকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং ‘ব্লু ইকোনমি’ বাস্তবায়নে নৌবাহিনীর কর্মপরিধি, দায়িত্ব ও গুরুত্ব বর্তমানে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ক্রমবর্ধমান এ সকল গুরুদায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে নৌবাহিনীকে আরো চৌকশ ও কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ বর্তমানে দ্রুততার সাথে এগিয়ে চলছে। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে একটি সুপ্রশিক্ষিত, জ্ঞানভিত্তিক ‘স্মার্ট নৌবাহিনী’ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

বাণীতে নৌবাহিনী প্রধান আরও বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রয়োজনে যে কোন দায়িত্ব পালনে সদা প্রস্তুত। এরই অংশ হিসেবে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় নৌসদস্যগণ অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে বিভিন্ন মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। অতিসম্প্রতি কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নৌসদস্যগণ উদ্ধার অভিযানসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছে। তাছাড়া, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পেশাদারি ভূমিকা বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সমুজ্জ্বল করেছে। আমি আশা করি, সশস্ত্র বাহিনী দিবসে নৌসদস্যগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে এবং জাতির পিতার প্রদর্শিত পথে পরিচালিত হয়ে সুউচ্চ পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে নৌবাহিনীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে সদা সচেষ্ট থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের অহংকার। আমাদের নবপ্রজন্মকে ইতিহাসের ধারক ও বাহক হিসেবে গড়ে তুলতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য ও উজ্জ্বলময় দিক বিশেষ ক্রোড়পত্রে প্রকাশের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং এই মহান প্রয়াসের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আজকের এই দিবসে আমি সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করছি। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের সহায় হোন। জয় বাংলা।’

কালের আলো/ডিএস/এমএম

Print Friendly, PDF & Email