খেলাপি ঋণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়লো
প্রকাশিতঃ 10:19 am | October 02, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
খেলাপি ঋণ ‘ঠেকাতে’ বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এখনো নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ পরিশোধে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়, অফার করা হচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। ব্যাংকের টাকা ‘নিজের মনে করে’ শোধ করছেন না খেলাপিরা। যার প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের তহবিলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এর মধ্যে মার্চ-জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। শেষ ছয় মাসে (ডিসেম্বর ২০২২ থেকে জুন ২০২৩) বেড়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা।
মহামারি করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঋণ পরিশোধে পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ঋণ শোধ না করেও গ্রাহককে ‘খেলাপি’ স্ট্যাটাস থেকে মুক্ত রাখার সুযোগ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কম সুদে ঋণ নেওয়া ও ঋণ পরিশোধে কিছুটা ছাড় ছিল ২০২২ সালেও। চলতি বছরও ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধে রয়েছে বিশেষ ছাড়।
এমন সব সুযোগের পরও ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না গ্রাহক। যে কারণে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে খেলাপিদের বিশেষ ছাড় বন্ধ না হলে খেলাপি ঋণ কমবে না বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা, তাদের মতে ঢালাওভাবে সুবিধা প্রদানের কারণে ব্যাংকের পাশাপাশি গ্রাহকও বিপদে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ২০ জুন জানায়, যদি কোনও গ্রাহক চলতি বছরের জুনের মধ্যে ঋণের কিস্তির অর্ধেক টাকা জমা দেন, তিনি খেলাপি হবেন না। ফলে যারা ঋণ নিয়ে কিস্তি শোধ না করে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিলেন, তারা কিস্তির অর্ধেক টাকা জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক হওয়ার সুযোগ পান। তবে শুধু মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হয়। সাধারণত ব্যবসা শুরু করা বা শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে মেয়াদি ঋণ নেওয়া হয়।
এদিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ। সংস্থাটির শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।
কালের আলো/ডিএস/এমএম