সীমান্ত সম্মেলনে নতুন মাত্রা, আরও নিরাপদ-সুসংহত হবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত
প্রকাশিতঃ 9:23 pm | November 29, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে তৈরি হয়েছিল উদ্ভুত পরিস্থিতি। সঙ্কটময় এমন মুহুর্তেই মিয়ানমারের রাজধানী ‘নেপিতো’তে অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) অষ্টম সীমান্ত সম্মেলন। সম্মেলনে নেওয়া হয়েছে ১২ টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
প্রায় দু’বছর পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন শেষে দেশ ফিরে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিজিবি সদর দপ্তরের শহীদ ক্যাপ্টেন আশরাফ হলে বিজিবি-বিজিপি সীমান্ত সম্মেলন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের এই সম্মেলন পারস্পরিক আস্থা ও সম্পর্ক উন্নয়নে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সীমান্তে শান্তি রক্ষায় নিজেদের ভেতরকার তথ্য-যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেন বিজিবি-বিজিপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত আরও নিরাপদ ও সুসংহত করতে এই সম্মেলন কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া আশাবাদী বিজিবি মহাপরিচালক দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সীমান্তে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিরসন, আকাশসীমা লঙ্ঘন আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বাড়ানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে অত্যন্ত কার্যকর ও ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তেই উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন
এবারের সীমান্ত সম্মেলনটিকে নানা দিক থেকেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতি এবং অন্যান্য সঙ্গত বিভিন্ন কারণে এবার সম্মেলনটি প্রায় দুই বছর ১০ মাস পর অনুষ্ঠিত হলো। সর্বশেষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ঢাকাতে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী, দূরদর্শী সিদ্ধান্ত এবং অনুমোদনের ভিত্তিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সিনিয়র লেভেলে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়কে, যার সার্বক্ষণিক দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতায় সম্মেলনের যাবতীয় কার্যক্রম অত্যন্ত সূচারুরূপে আমরা সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি।’
আমি আশা করি, এই সম্মেলনে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কার্যকরী বাস্তবায়ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি আরও সুসংহত হওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত অপরাধ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। এর পাশাপাশি দুই বাহিনীর মধ্যে বিভিন্নস্তরে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এই সম্মেলন একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে আমি মনে করি।’

দু’সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিবিড় যোগাযোগের সফলতা; শান্ত সীমান্ত
প্রায় তিন বছর পর সীমান্ত সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার নিবিড় যোগাযোগের দ্বার উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে বিজিবি-বিজিপি। সীমান্ত সম্মেলন শেষে বিষয়টিকে বড় সফলতা হিসেবেই দেখতে চান বিজিবি মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন বছর পর তাদের সাথে যোগাযোগটা স্থাপন হয়েছে। এ সম্মেলন স্বার্থকভাবে সম্পন্ন হওয়া অবশ্যই একটি বড় সফলতা বলবো আমি।’
গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় বা আভ্যন্তরীণ সংঘাতে সীমান্তে যা ঘটেছে এসব বিষয় আমরা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তাদের কাছে উত্থাপন করেছি। আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা তাদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন। আমরা বলেছি যে, সীমান্ত এলাকায় গোলা পতন এবং এর জন্য যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এটা সীমান্তের ওপার থেকে গোলাবর্ষণের কারণেই হয়েছে। তো এই বিষয়ে আমরা তাদের উল্লেখ করেছি যে, আপনাদের যে কম্পিটেন্ট অথরিটি আছে তাদেরকে বিষয়টা বলেন এবং আমাদের অবস্থানটা জানান।
যেহেতু আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী, আমরা চাইবো সম্মিলিতভাবে যৌথভাবে সীমান্ত যেন শান্ত থাকে। সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সীমান্তে ব্যবস্থাপনা যেন ঠিকমতো চলে। আপনারা জানেন, প্রত্যেকটা ঘটনার পরেই আমরা আমাদের সীমান্তরক্ষী পর্যায়ে প্রতিবাদ পাঠিয়েছি এবং সরকারের পক্ষ থেকেও কূটনৈতিকভাবে এটার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, নিয়ম ভেঙে আকাশসীমা অতিক্রমের বিষয়টি আমরা বলেছি। যদি এমনটা ঘটে তাহলে সীমান্ত এলাকায় স্থানীয়ভাবে শঙ্কা বা সংশয় তৈরি হয়। এটা সীমান্তে শান্তির জন্য বাধা। যদি ড্রোন, হেলিকপ্টার উড্ডয়নের প্রয়োজন হয়, যেন আমাদের তা অবগত করা হয়। আমরা যেন লক্ষ্য রাখতে পারি সীমান্ত অতিক্রমের বিষয় ঘটে কি না। তারা (বিজিপি) আশ্বস্ত করেছেন তথ্য শেয়ার করবেন এবং এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটবে না।’
সুসংবাদ জানিয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আমার যেটা মনে হয় এই বিষয়ে তারা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ কারণেই পরবর্তীতে কিন্তু আমরা এ ধরনের ঘটনা পাইনি বা গোলা পতনের কোন ঘটনা ঘটেনি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে ভবিষ্যতেও তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সীমান্তে পরিস্থিতি কোন ধরণের অবনতি যেন না হয়, এই বিষয়ে তারা খেয়াল রাখবেন।’
বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে ইতিবাচক আশ্বাস
বিজিবি মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মিয়ানমার বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছে। প্রত্যাবাসন দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া তবে এই বিষয়ে মিয়ানমার কাজ করছে বলেও জানান তিনি। বিষয়টিকে বিস্তৃত পরিসরে উল্লেখ করে মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, ‘একটা বিষয় নিয়ে যখন আলোচনা হয়, তখন যিনি বলেন তিনি গুরুত্ব সহকারে বলেন। যিনি বিষয়টি শুনছেন তিনিও কেমনভাবে নিচ্ছেন সেটি বোঝা যায়। আমরা যেসব বিষয় বলেছি। তারা প্রত্যেকটি জায়গায় অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে শুনেছেন। এসব গ্রহণ করে ইতিবাচক মনোভাব দেখাতে আমরা পেয়েছি এবং তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’
‘এই দেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, এমন ভিডিও আমরা তাদের দেখিয়েছি। যুব জনগোষ্ঠীকে টেকনিক্যাল শিক্ষা দিয়ে ম্যানপাওয়ারে রূপান্তরিত করছি। যাতে তারা নিজেদের আবাসে ফিরে যাওয়ার পর নিজেদের চালিয়ে নিতে পারেন। বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে মানবিক কারণে। এ বিষয়গুলো বলার পরে তারা এটা গ্রহণ করে আলোচনা করে কাজ করার কথা বলেছেন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও কাজ করছে। আমরা আশা করতেই পারি তাদের কার্যক্রম চলমান আছে।’
মিয়ানমারের রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘আমি মনে করি সেখানকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে তাদের আলোচনায় বার বার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলেছেন। সেখানে তাদের যে মিস ফায়ার চলেছে সেটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে বলে জানিয়েছেন। এটা করে তারা সেখানে মানবিক বিপর্যয় রোধ করার চেষ্টা করছেন। আগের তুলনায় রাখাইনের পরিস্থিতি ভালো। এটা রোহিঙ্গাদের ফেরতের জন্য ইতিবাচক।’

আরও যেসব বিষয়ে আলোচনা
সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, সম্মেলনে আন্তঃসীমান্ত অপরাধী চক্রের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ অন্যান্য মাদক ও মানব পাচার রোধের বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান, যৌথ টহল পরিচালনা, রিজিয়ন ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত সমন্বয় সভা, পতাকা বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে কথা হয়। এছাড়াও সীমান্তে আটককৃত, সাজাভোগকৃত উভয় দেশের নাগরিকদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়েও আলোচনা হয়।
সীমান্তে স্থলমাইন রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, স্থলমাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি হতাহতের শিকার হয়েছেন। তাদের (মিয়ানমারের) নাগরিকও হতাহতের শিকার হয়েছেন। সীমান্তে কাঁটাতারে ইলেক্ট্রিফিকেশন করা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত বা ভুলবশত দুই দেশের নাগরিক যদি এর সংস্পর্শে আসে তাহলে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পাররে। তারা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জয়েন্ট সার্ভের মাধ্যমে টহল ঠিকমতো করতে পারলে স্থলপথে সীমান্ত অপরাধগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবো। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ অন্যান্য মাদক ও মানব পাচাররোধে বিজিবির সফলতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মাদক চোরাচালানে বিজিবি অনেকটাই সফল। তবে এখনো শতভাগ সফল হতে পারেনি। দুদেশের যৌথ টহলের মাধ্যমে এটা আরও কমানো সম্ভব হবে।’
হঠাৎ করে সমাধান হয় না
২০১২ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবি সদস্যসহ সামরিক বেসামরিকসহ ১৯ জন নিখোঁজ হন। এর মধ্যে বিজিবির নায়েক মিজানুর রহমানের লাশ চার দিন পর ফেরত দিলেও লুট করা বিজিবির ১১ অস্ত্র আজও ফেরত দেয়নি মিয়ানমার সেনাবাহিনী। যদিও অনেক ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে, স্বরাষ্ট্র ও পরাষ্ট্র পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ১০ বছরেও সেই ১১ অস্ত্র ফেরত পায়নি বিজিবি।’
সেই লুট করা অস্ত্র ফেরত পাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছিল কি না, জানতে চাওয়া হয় মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, ‘এমন অনেকগুলো ঘটনা আছে, যেগুলো অনেক পুরনো দিনের। এসব ঘটনা নিয়ে সমাধান আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে হঠাৎ করে সমাধান হয় না।’
মহাপরিচালক সাকিল আহমেদ বলেন, ‘যখন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্মেলন হবে, সেখানে ধীরে ধীরে আলোচনা হবে, সমাধান হবে বলে আশা করি। আলোচনা করাই হয় সমাধানের জন্য। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের ১৮ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায় তারা। মাত্র চারজনকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব কড়াভাবে মিয়ানমারকে বলেছি। জেলেরা তো বোঝে না কোনটা আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাইন।
তারা জীবিকার কারণে সেখানে ভোগান্তিতে পড়ে। ভুলবশত হলে সঙ্গে সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করে তাদের দেওয়ার কথা দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে লেখা আছে। খুব সিরিয়াস কোনও ইস্যু ছাড়া আমরা যেকোনও সমস্যা বসে মিটিং বৈঠকে সমাধান করতে পারি।’
সীমান্তে বিজিবির নায়েক খুন, অস্ত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কোনও সংযোগ ছিল কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সীমান্তে মাদক, বিচ্ছিন্নতাবাদী অপতৎপরতা রোধসহ সবকিছুর ব্যাপারে আমাদের নীতি জিরো টলারেন্স। আমাদের অবস্থান সব সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে।
শুধু আরসা বা আরএসও এর মতো দুই একটি নামেই আমরা সীমাবদ্ধ যেন না থাকি। আমরা এদের কোনও কার্যক্রম সহ্য করবো না। সে জন্য আমরা সব সময় সাবধান আছি। ঘুমঘুম সীমান্তের কোনারপাড়ায় আমাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক ছয়টি পোস্ট রয়েছে। সারা দিন মিলে এক প্লাটুন বিজিবি ডিউটিতে রয়েছে। যাতে কোনও অপরাধী ও অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে।’
যৌথ টহলের বিষয়ে আশ্বাস নয়, সিদ্ধান্ত
যৌথ টহলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি ডিজি বলেন, ‘সীমান্তে যৌথ টহলের বিষয়ে আশ্বাস নয়, সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা শিগগিরই শুরু হবে। আমি চাই এটাকে চলমান রাখা গেলে গ্রাউন্ড লেভেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমি বিশ্বাস করি যোগাযোগ বাড়ানো গেলে এটি সম্ভব হবে, জোর দিয়ে বলছি আমি বাড়াবো।’
মায়নমারের সঙ্গে যোগাযোগ জারি রাখতে চাই জানিয়ে বিজিবিপ্রধান বলেন, ‘উভয় দেশের সীমান্তে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে একযোগে অভিযান পরিচালনারও বিষয়ে একমত হয়েছে তারা। কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন যেন সীমান্ত অতিক্রম করে একে অপরের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারে, এ জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। এটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা রিয়েল টাইম ইনফো শেয়ার করতে পারবো।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় অবস্থান সবগুলো সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে। সবগুলোর বিরুদ্ধেই জিরো টলরেন্স রয়েছে। এরা যেন আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য মিয়ানমার সীমান্তে ছয়টি পোস্টে এক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন আছে। যেন সন্ত্রাসীরা পাসিং বা অন্যান্য অপরাধ না করতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস ও ট্রেনিং) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এম এম খায়রুল কবির, কক্সবাজারের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজম উস সাকিব, পরিচালক (অপস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়েজুর রহমানসহ স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এমএএএমকে