পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে শাহবাজ!

প্রকাশিতঃ 10:19 am | April 10, 2022

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:

নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন তিনি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতন হলো মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই। তবে ইমরান খানের পর কে এখন পাকিস্তানের হাল ধরবেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

ইমরান খানের পরিবর্তে সিংহাসনে বসতে পারেন বিরোধীদলীয় নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। পাঞ্জাব প্রদেশের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ।

পাকিস্তানের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ। ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের লড়াইয়ে বিরোধীদের নেতৃত্ব দেন তিনি। শনিবার দিনগত রাতে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন ইমরান। কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে এবার পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন শাহবাজ শরিফ।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে শাহবাজের, তাঁর বড় ভাই নওয়াজ শরিফের যা ছিল না। ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে ২২ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবাহিনী। পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ক্ষমতায় থাকার অন্যতম মূল চাবিকাঠি।

একাধিক বার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শাহবাজ শরিফ। সে সময় চীনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে বেইজিংয়ের নেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন শাহবাজ।

শাহবাজ তিন দফায় ১২ বছর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। পাঞ্জাবের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। প্রথমে ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ এবং পরে টানা দুই দফায় ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শাহবাজ। ২০১৮ সাল থেকে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে শাহবাজ বিরোধী দলনেতার পদ সামলেছেন।

১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের পর শাহবাজকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে সৌদি আরবে নির্বাসনে যেতে হয়েছিল তাঁকে। শাহবাজ ২০০৭ সালে পাকিস্তানে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালে প্রকাশিত পানামা পেপারসে নওয়াজ শরিফের নাম থাকার পর শাহবাজ পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) প্রধান হন। পাঞ্জাবের রাজনীতি ছেড়ে সেই প্রথম জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ তাঁর।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের ‘ভালো সম্পর্কে’ বিশ্বাসী শাহবাজ শরিফ। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের পর থেকেই তিনি (ইমরান) অভিযোগ করে এসেছেন যে, তাঁর সরকারের পতনের নেপথ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে শাহবাজ তাঁর ভাইয়ের মতোই মার্কিনপন্থি নীতিতে বিশ্বাসী। গতকাল অনাস্থা ভোটে বিরোধীদের জয়ের পর শাহবাজ পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। কারও প্রতি অবিচার করব না এবং কাউকে জেলে পাঠাব না। আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।’

কালের আলো/বিএস/এমএন

Print Friendly, PDF & Email