আশা করছি খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাব : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 3:55 pm | September 22, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র ফেরত দেবে বলে আশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‌‘এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াগুলো শেষ করার কাজ চলছে।’

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) লোট নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক কর্মসূচির ওপর মিডিয়া ব্রিফিংকালে এ প্রত্যাশার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনবো বলে আশা করছি।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত ১২ আসামির একজনকে ফিরিয়ে দেয়ায় ঢাকা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকেও ফিরে পাওয়ার আশা করছে।

এ সময় অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র জামায়াত বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে জনসমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে অসৎ উদ্দেশে তারা বিদেশে অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রধানত গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে জাতিসংঘের আইন ও নীতিমালার অনুমোদন করছে।

হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের এই ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।

খুনি রাশেদ চৌধুরী ব্রাজিল থেকে ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে। কিন্তু ফাঁসির আসামি হওয়ায় তাকে ফেরত দিতে অনীহা দেখায় যুক্তরাষ্ট্র।

রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালে দুবার এবং ২০২০ সালে আরও একবার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও একাধিক বৈঠকে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর দাবি তোলেন।

২০১৯ সালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে এক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাশেদ চৌধুরীর বিচারের নথিপত্র চেয়েছে ওয়াশিংটন।

ঢাকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে গত বছরের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয় দেশটির বিচার বিভাগ। এর মধ্যেই দেশটির ক্ষমতার পালাবদল হয়ে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হন। সর্বশেষ, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। দেশে ফিরে মোমেন জানান, রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের সঙ্গে আলাপ করেছেন।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল