গাড়ি চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশিতঃ 7:12 pm | August 11, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে গাড়ি চোর চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

আটকরা হলেন- মো. সোহেল (২৬), মো. সাগর (২৩), মো. সাকিব হোসেন (২৫), মো. হাসান (২৬) ও মো. কামরুজ্জামান (৩৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি পিকআপ, সাতটি টায়ার রিং, দুটি টায়ার, একটি টুলস বক্স, একটি চাবির ছড়া ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাত থেকে বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকা তাদের আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গত তিন বছরে এ চক্রের সদস্যরা শতাধিক গাড়ি চুরি করেছেন। গ্রেফতার এড়াতে চক্রটি বাটন মোবাইল ব্যবহার করতেন। এছাড়া একটি মোবাইল তারা পাঁচদিনের বেশি ব্যবহার করতেন না এবং রাতে ঘুমানোর সময় তাদের থেকে মোবাইলগুলো এক কিলোমিটার দূরে রেখে ঘুমাতেন।

বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, আটক সংঘবদ্ধ চক্রটি পরস্পরের যোগসাজশে তিন বছর ধরে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ চুরি করে আসছে। আটক সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করতেন। তারা সম্পর্কে আপন ভাই। তারা উভয়ই মাদকাসক্ত। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ও মাদকের টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করেন। বিশেষ করে সোহেলের গাড়ি চালানোর দক্ষতা থাকায় পিকআপ গাড়ির লক ভাঙা ও যেকোনো চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করার বিষয়ে তিনি অভিজ্ঞ। এছাড়া গাড়িতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দ্রুত শনাক্ত করে অকেজো করে দিতে সক্ষম সাগর।

তিনি বলেন, সোহেল ও সাগর গত বছর গাড়ি চুরি মামলায় কুমিল্লা কারাগারে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে মাদক মামলায় গ্রেফতার সাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়ে হাসান ও কামরুজ্জামানকে নিয়ে গাড়ি চুরির চক্র গড়ে তোলেন। পার্কিংয়ে থাকা পিকআপই তারা বেশি চুরি করতেন। ড্রাইভার বা মালিকের অনুপস্থিতিতে সুবিধা মতো সময়ে বিশেষ কৌশলে গাড়ির লক ভেঙে ও বিশেষ ধরনের মাস্টার চাবি দিয়ে স্টার্ট করে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেতেন।

এছাড়া মাদকসেবী চালকের সঙ্গে সখ্য তৈরি করে পিকআপ ভ্যান চুরি করতে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করতেন। এজন্য গাড়ি চুরি করে মালিকের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটি অংশ চালককে দিতেন তারা। এর বাইরে চালকদের বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যেতেন।

চোরাই গাড়ির মালিককে ফোন দিয়ে গাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন। এর বাইরে চোরাই গাড়ির রঙ পরিবর্তন করে ভুয়া নম্বরপ্লেট লাগিয়ে কম দামে সেগুলো বিক্রি করতেন। এই দুই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করতেন তারা।

কালের আলো/বিএস/এমএইচ