বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ‘বিস্ময় বালক’ সুবর্ণ বিশ্বের সবেচেয়ে কম বয়সী অধ্যাপক

প্রকাশিতঃ 12:49 pm | May 03, 2021

কালের আলো ডেস্ক:

ক্ষুদ্রকে কখনও করো না কো অবহেলা, একদিন এই ক্ষুদ্রই করবে বিশ্ব জয়। ঠিক এমনটাই করেছিল দুই বছর বয়সী ছোট্ট প্রতিভাবান শিশু সুবর্ণ। যাকে এখন সবাই চেনে আইজ্যাক সুবর্ণ বারী নামে। একের পর এক বাঘা বাঘা অংক নিমিষেই সমাধান দেয়া অদ্ভুত এই শিশুটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুবর্ণ আইজ্যাক বারী যুক্তরাষ্ট্রে ‘বিস্ময় বালক’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। রসায়নের ‘পিরিওডিক টেবল’ অর্থাৎ পর্যায় সারনী পড়তে গিয়ে যেখানে অনেকেই হয়ত হোঁচট খেয়েছে, আর সেখানে মাত্র আড়াই বছরে বয়সেই তা মুখস্থ বলে দিতে পারত সুবর্ণ।

২০১২ সালের ৯ এপ্রিল নিউইয়র্কে জন্ম সুবর্ণের। তার বাবার নাম রাশিদুল বারি। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের গণিত শিক্ষক।

মাত্র তিন বছর বয়সেই নিজের মেধাকে জানান দিতে ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাতকার দেয় এই শিশুটি। মেধাকে যাচাই করতে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন অধ্যাপক জ্যমিতি, বীজগণিতসহ রসায়নের জটিল বিষয়ের পরীক্ষা নিয়েছেন সুবর্ণের।

ছোট থেকেই সবাইকে অবাক করে একের পর এক কৃতিত্ব দেখিয়েছে সুবর্ণ। দেড় বছর বয়স থেকেই সংখ্যা এবং অংকের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। তখন তার বাবা তাকে আরও কঠিন কিছু শেখাতে শুরু করলেন। তিনি সুবর্নকে জ্যামিতির বিভিন্ন আকৃতি শেখালেন। তারপর শেখালেন রসায়নের পর্যায় সারনী। এভাবেই বাবার হাত ধরেই তার পথচলা শুরু। দুই ভাইয়ের মধ্যে সুবর্ণ ছোট।

পিএইচডি স্তরের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সক্ষম হওয়ায় খুব অল্প বয়সেই বিশ্বে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, সন্ত্রাসবিরোধী ক্যাম্পেইন ও নিজের লেখা ‘দ্য লাভ’ গ্রন্থের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে চাইল্ড প্রডিজি হিসেবে পরিচিত সে। এছাড়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে একজন অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী এ অধ্যাপককে বিশেষ সম্মাননা জানিয়েছেন।

অক্সফোর্ড ও পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানায় সুবর্ণকে। ২০১৮ সালে তাকে খুদে বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সুবর্ণকে বিজ্ঞানী হিসেবে ভারতের দিল্লিতে ‘গ্লোবাল চাইল্ড প্রডিজি অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী। পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে তাকে দেশটির মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও তার ট্যালেন্টে দেখে তাকে চিঠি দিয়েছিলেন। এরকম আরও অনেকে অনেক অর্জনের ভরপুর ছোট সুবর্ণের ঝুলি।

সুবর্ণর বাবা যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি রাশীদুল বারী এবং মা শাহেদা বেগম। এই দম্পতি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। রাশীদুল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে পিএইচডি করে নিউ ইয়র্কের ব্রোনক্স কলেজের গণিতের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। এই পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান সুবর্ণ।

কালের আলো/এসজে/এমএম