২০২৪, দেখা হবে কামালা?

প্রকাশিতঃ 11:00 am | November 09, 2020

তুষার আবদুল্লাহ :

জোসেফ বাইডেনের দৌড়ের সঙ্গী হিসেবে যখন প্রথম নাম এলো তাঁর, এবং জানা গেল উনার শেকড় ভারতের চেন্নাইতে গ্রথিত, তখন থেকেই উপমহাদেশের সকল অভিবাসী তাঁকে কমলা দেবী বা কমলা বুবু ডাকতে শুরু করে দিলেন। তিনি যেন ভারত-বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের আমাদের সকলের ঘরের কন্যা।

পৈত্রিক সূত্রে শেকড়ের এক প্রান্ত চলে গেছে জ্যামাইকায়। আফ্রো আমেরিকান বলেই তিনি পরিচিত। শিক্ষা, সমাজসেবা, রাজনীতিতে মুক্তার স্ফূরণ ছড়ান কামালা হ্যারিস। দৌড়ের সঙ্গী হিসেবে নাম ঘোষণার পর, ধীরে ধীরে কামালা হ্যারিস নিয়ে আলোচনার আলো কমতে থাকে। ঝারবাতির আলো কেন্দ্রীভূত হয় জোসেফ বাইডেন আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর।

‘কামালা স্পটবাদী। রাখঢাক করে কথা বলেন না। কাউকে মিছে সন্তুষ্ট বা প্রবোধ দেবার অভ্যেস নেই। যা যেমন দেখেন তাই বলেন। ধর্ম, বর্ণ, রঙ, গোত্র বৈষম্য অপছন্দ তাঁর। মায়ের সঙ্গে ছোটবেলায় মন্দিরে যাওয়ার অভ্যেস ছিল যে মেয়েটির, তিনি ধর্মপ্রাণ নন। ধর্ম নিয়ে কোন প্রকার উগ্রতার ধার ধারেন না তিনি। সকল ধর্মের প্রতি সহনশীল।’

ভোট উত্তেজনার একপাশে কিন্তু মিটমিট করে জ্বলছিলেন কামালা হ্যারিস। শনিবার সাদাবাড়ির বাসিন্দার নাম উচ্চারিত হলে, ডোনাল ট্রাম্প ছিটকে পড়েন ঝারবাতির আলোর নাচন থেকে। সেখানে চলে আসেন কামালা হ্যারিস। তাঁকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে উঠার প্রধান কারণ, মার্কিনীরা প্রথমবারের মতো একজন মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট পেল। দ্বিতীয়ত, তিনি আফ্রো আমেরিকান এবং ভারতের সঙ্গে শেকড়ে বাঁধা।

দৌঁড়ের সঙ্গী হলেন, তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারই কামালা হ্যারিসের বয়সের কাছাকাছি। প্রবীণ আর তরুণের এই রাজনৈতিক রাখিবন্ধন প্রথমত আমেরিকার জনমানুষের আশা-আকাঙ্খার কতোটা প্রতিফলন ঘটাবে, সেটি আগে দেখতে হবে। বাইডেন যেমন বলেছেন , যারা ভোট দেননি, এবং যারা দিয়েছেন, তিনি সবার প্রেসিডেন্ট। হ্যারিস যেমন তাদের যূথবদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বলেছিলেন- আমরা দুজন একই কাপড় থেকে কেটে নেয়া দুটো টুকরা। অভিবাসী পরিবারে বেড়ে উঠা কামালার ভোটের প্রচারণার কথা নিশ্চয়ই স্মরণে থাকবে-আমেরিকা সুযোগ্য নেতৃত্বের জন্য অপেক্ষা করছে। এবং প্রস্তুত আছি কাজ করার জন্যে।

ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত, পুরাণের পাঠ নিশ্চয়ই কামালা হ্যারিসের মনভূমি চ্যুত হয়নি। তার গলায় শোভা পাওয়া মুক্তোর মতোই মেধার স্ফূরণ ঘটাবেন তিনি আগামী চার বছর, এমন ভরসা রাখতে গিয়ে মার্কিন দেশে থাকা দেশি-ভিনদেশি বন্ধুদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কামালা হ্যারিস সম্পর্কে। এদের কেউ কেউ কামালা হ্যারিসকে দেখেছেন কাছ থেকে।

নানা সামাজিক কাজের সহকর্মীও ছিলেন একজন। তাদের পর্যেবক্ষণের নির্যাস হলো- কামালা স্পটবাদী। রাখঢাক করে কথা বলেন না। কাউকে মিছে সন্তুষ্ট বা প্রবোধ দেবার অভ্যেস নেই। যা যেমন দেখেন তাই বলেন। ধর্ম, বর্ণ, রঙ, গোত্র বৈষম্য অপছন্দ তাঁর। মায়ের সঙ্গে ছোটবেলায় মন্দিরে যাওয়ার অভ্যেস ছিল যে মেয়েটির, তিনি ধর্মপ্রাণ নন। ধর্ম নিয়ে কোন প্রকার উগ্রতার ধার ধারেন না তিনি। সকল ধর্মের প্রতি সহনশীল ।

হিলারী ক্লিনটনকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে না পেয়ে হতাশ ডুবে যাওয়া বিশ্বনাগরিকেরা, এবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন কামালা হ্যারিসকে নিয়ে। ২০২৪ সালে তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে সাদাবাড়িমুখি হবেন। তিনি যেমন করে ইতিহাস গড়লেন প্রথম মহিলা হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে, দ্বিতীয় ধাপের ইতিহাসটিও গড়ুক মুক্ত ও মেধার দ্যুতি ছড়ানো কামালা হ্যারিস। প্রিয় কামালা, ২০২৪ এ মার্কিন দেশে আপনার বিজয় ভাষণে উপস্থিত থাকার রসুন বুনে রাখলাম।

লেখক : বার্তা প্রধান, সময় টিভি।