ডেঙ্গু চিকিৎসায় অতিরিক্ত বিল, তদন্তে ভোক্তা অধিদপ্তর
প্রকাশিতঃ 10:32 am | July 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোর দেওয়া অতিরিক্ত বিল তদন্তে নামছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ‘মাত্রাতিরিক্ত’ অর্থ আদায়ের অভিযোগের যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে তদারকি করতে সোমবার (২৯ জুলাই) থেকে মাঠে নামবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে দেখবে প্রতিষ্ঠানটির চারটি টিম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অধিদফতরের উপ পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
এর আগে রবিবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ঢাবি শিক্ষার্থীর চিকিৎসা বিল স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়। সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল স্কয়ার হাসপাতালে গিয়ে বিলটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে ইতোমধ্যে।
অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ঢাবির সেই ছাত্রের বিস্তারিত তথ্য আমরা আনতে পাঠিয়েছি। আমাদের অফিসের কয়েকজন গিয়েছিলেন তথ্য নিয়ে আসতে। আমরা দেখতে চাচ্ছি আসলেই বিলটি বেশি হয়েছে কিনা। এখন ডেঙ্গুর সময় জনমনে যাতে ভুল তথ্য গিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা চাই আমাদের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এগুলো দীর্ঘদিনের সুনাম ধরে রাখুক। সেক্ষেত্রে ১০ এর মধ্যে দশমিক ১ শতাংশ ভুল করে থাকে তাহলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমি স্কয়ার হাসপাতাল সেই ছাত্রকে যেসব ওষুধ দিয়েছে এসবের মূল্যের বিষয়ে আমি নিজে তদারকি করছি। আমি ওষুধের নামগুলো দিয়ে বাজারের দামের তালিকা চেয়েছি রাতের মধ্যে। আর অন্যান্য যেসব চার্জ আছে সেসবের বিষয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করবো। কয়েক জায়গায় দেখাবো, তাদের মতামত নেবো।
মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, এখন এমন একটা সময় মানুষ অনেকটা অসহায় বোধ করছে। আজকে আমি দেখলাম কয়েক জায়গায় মশার ক্রিম অডোমস এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের টিমগুলো কাল (সোমবার) সকাল থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যাবে। আজকে কয়েকটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে তথ্য পেয়ে গেছি। যদি সত্যতা পাওয়া যায় আমরা ব্যবস্থা নেবো। কালকে আমার ৪টি টিম সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এটা নিয়ে কাজ করবে। সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের থেকে ১০ টাকা বেশি নিলেও আমরা ধরবো। আমরা যদি অতিরিক্ত মূল্য নিতে দেখি প্রয়োজনে আমরা হাসপাতালের ল্যাব টেস্ট বন্ধ করে দেবো।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ কবীর স্বাধীনকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর ২২ ঘণ্টারও কম সময়ে বিল এসেছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৪ টাকা। এত কম সময়ে কী করে এত টাকা বিল হলো, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ফিরোজের পরিবারসহ তার সহপাঠীরা। বিল নিয়ে কথা বলতে গেলে কয়েক জায়গায় ঘুরিয়েও কোনও তথ্য দিতে পারেনি স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ফিরোজের বড় ভাই মো. ফজলুল করীম বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কেবল কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার, একদিনও পার হয়নি। এর ভেতরে কী করে এত টাকা খরচ হলো, সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না।’ হাসপাতালগুলো রোগীদের অসহায়ত্ব নিয়ে ব্যবসা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কালের আলো/এআর/এমএম