সব কাজে সরকারকে দোষারোপ কেন?
প্রকাশিতঃ 12:11 pm | July 26, 2019

রেজাউল করিম ::
যতো দোষ নন্দ ঘোষ। সব ব্যর্থতা কারও উপর চাপিয়ে দেওয়াটা আমাদের অভ্যাস। রাষ্ট্রীয়ভাবেও তাই। সরকারের ব্যর্থতা হলেও মুখ ফুলিয়ে দোষারোপ করে থাকি। সব সরকারের সময়ে কিছু ভালো দিক থাকে। আমরা সেটা মুখে আনি না। আসলে ভালোকে ভালো বলা আর ব্যর্থতাকে সংশোধনের সুযোগ করে দেওয়াটা আরেকজন ভালোর ভালো গুণ। হ্যাঁ সরকার সব ভালো করতে পারে না। তবে ভালোটুকুকে ভালো বলার অভ্যাস করাটা আমাদের জন্য জরুরি।
সম্প্রতি ছেলেধরা আতঙ্ক। সরকার বলছে গুজব। আসলেও তাই। সেতুতে কেন মাথা লাগবে? গুজবকে কেন্দ্র করে হুজগ। হুজগে গণধোলাই। কয়েকটি নিষ্পাপ প্রাণের অবসান। গুজবকে সার্থক করতে নেত্রকোনা ও চুয়াডাঙায় ঘটনাও ঘটিয়ে দিলো ফায়দালোটা একটি মহল। আতঙ্ক আরও বেড়ে গেলে। সরকার কি করবে? সচেতনতা সৃষ্টি। রহস্য উদঘাটন। গণধোলাইকারীদের বিচারের আওতায় আনা। সাধ্যমত চেষ্টা করছে। পুলিশ বিভিন্ন মহলে সচেতনতা সৃষ্টি করছে।
সরকারের নানা রকম প্রচেষ্টা আমাদের চোখে পড়ছে না। আমরা দোষারোপ করছি সরকারকে। তাহলে কি বলতে চাচ্ছি? সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বড় দোষ করে ফেলেছে? অবশ্যই না। এটা দেশের উন্নয়ন। যোগাযোগ ব্যবস্থার অগ্রগতি। বরং গুজব এড়াতে সরকারকে পরামর্শ বা সহযোগিতা করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব।
পদ্মা সেতুর মাথা লাগার গুজব চলা অবস্থায় সরকারকে ডেঙ্গু নিয়ে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে একটি মহল। সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এডিস নামক মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। এখন সরকারের কি করা উচিৎ? মশা নিধন কর্মসূচি।
মশার কামড় সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি। মশা নিধনের ওষুধ সরবরহ করা। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। সরকার কিন্তু ষোল কোটি মানুষের ঘরে ঘরে মশা মারতে পারবে না। মশা আমাদেরকেই মারতে হবে। সচেতন আমাদেরই হতে হবে। তাহলে অহেতুক সরকারকে ডেঙ্গু নিয়ে দোষারোপ করে লাভটা কি হচ্ছে? কিচ্ছু না।
‘ডেঙ্গু’ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাদত হোসেন হাজরা। প্রথমে তিনি বুঝতেই পারেনি তার ডেঙ্গু হয়েছিল। আমার মতো সাধারণ মানুষ বুঝব কিভাবে? সরকার সবাইকে বুঝাবে কিভাবে? সিভিল সার্জন শাহাদত হোসেনের কি চিকিৎসা দেয়নি সরকার? আসলে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগই পায়নি। এক্ষেত্রে সরকারকে দোষারোপ করবেন?
আসুন সব কাজে সরকারকে দোষারোপ না করে শুরু করি আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান এবং সাধ্যমত সহযোগিতা। ষোল কোটি মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের দেশ হবে কাঙিক্ষত বাংলাদেশ।
লেখক: সংবাদকর্মী ও পরিচালক-ইমপ্রুভ শিক্ষা পরিবার।