চট্টগ্রাম কাস্টমসে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

প্রকাশিতঃ 5:52 pm | June 29, 2025

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক, কালের আলো:

দ্বিতীয় দিনের মতো রোববার (২৯ জুন) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস, ভ্যাট বিভাগ ও কর বিভাগে এনবিআর কর্মকর্তাদের ‘শাটডাউন কর্মসূচি’ পালনের কারণে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম কাস্টমসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে দেশের প্রধান বাণিজ্যিক বন্দর চরম অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে। ভোগান্তির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ী এবং রপ্তানিকারকরা। বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ।

জানা গেছে, কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে এক দিনেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৩ হাজার ৬৮০ একক কনটেইনার রপ্তানি হয়নি। এসব কনটেইনারের সিংহভাগই পোশাকশিল্পের। রপ্তানি না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্য সময়মতো পৌঁছানো যাবে না।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ও মুখপাত্র মো. ওমর ফারুক বলেন, বন্দরের পণ্য খালাস দিতে সব বিভাগ খোলা থাকলেও কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার শাটডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের আমদানি ও রপ্তানি। চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ী এবং রপ্তানিকারকরা। বন্দরের গেটে কাস্টমস কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন না করায় বন্দর থেকে পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ইন্ডল্যান্ড ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব মো. রুহুল আমিন সিকদার বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে ২১টি অপডকে রপ্তানি চালান জমা হয়ে যাচ্ছে। কোনো চালানের শুল্কায়ন হচ্ছে না। এতে রপ্তানি বন্ধ হয়ে রাজস্ব আদায়ও ব্যাহত হচ্ছে। বন্দর থেকেও কোনো খালাস হচ্ছে না।

শনিবারের মতো রোববারও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় পুরো অফিস প্রায় ফাঁকা। আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন, খালাস ও রপ্তানি পণ্যের শুল্কায়ন পরবর্তী জাহাজে ওঠানো কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আগে শুল্কায়ন করা চালানগুলোর খালাসেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। বন্দরের গেটে অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্য স্ক্যানিং ও পরীক্ষণ না করায় বন্দর কর্তৃপক্ষও পণ্য খালাস দেওয়া যাচ্ছে না।

ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট (সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট) মেসার্স সেভেন স্টার ইন্টারন্যাশালের প্রতিনিধি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আমাদের একটি রপ্তানি চালান শুক্রবার ইসহাক ডিপোতে আসছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে চালানটি শুল্কায়ন করা যায়নি।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, শনিবার থেকে সারাদেশে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে কমপ্লিট শাটডাউন কার্যক্রম চালু থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। পাশাপাশি, সারাদেশের রাজস্ব দপ্তর থেকে ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে।

এদিকে রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কাজে যোগ না দিলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হবে। আজ রোববার সরকার এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে।

সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার এনবিআরের আওতাধীন সব কাস্টম হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস বা সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কালের আলো/এমডিএইচ