প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আরও গতিশীল হবে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম : সচিব

প্রকাশিতঃ 9:17 pm | November 15, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের আগামীদিনের কার্যক্রম আরও বেগবান ও গতিশীল হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে চলতি বছরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন: ফায়ার সার্ভিসকে আরও যুগোপযোগী করতে চান প্রধানমন্ত্রী

সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী নিজের বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ‘মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি ১৫ আগস্টের কালো রাতে শাহাতাদতবরণকারী সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন একটি সুন্দর দেশ গড়ার। জাতির পিতার আজীবন স্বপ্নে লালিত সেই সোনার বাংলা গঠনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা হৃদয়ে ধারণ করে দেশের মানুষের কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।’

আরও পড়ুন: দু:সময়ের বন্ধু ফায়ার সার্ভিস

প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি বাড়াবে কর্মস্পৃহা
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ উপস্থিতি আমাদের কর্মস্পৃহা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার দিকনির্দেশনা ফায়ার সার্ভিসের আগামীদিনের কার্যক্রমকে আরও বেগবান ও গতিশীল করবে। পূর্বের দমকল বাহিনী নামে পরিচিত এই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে একটি আধুনিক ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে ১৯৯৬ সালে আপনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ফায়ার সার্ভিস ডিজি

২০০৯ সালে আপনার নেতৃত্বে পুনরায় সরকার গঠনের পর এই অধিদপ্তরের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হয়। যেখানে ২০০৮ সালে ফায়ার স্টেশন ছিল ২০৪ টি বর্তমানে চালুকৃত ফায়ার স্টেশন হচ্ছে ৪৯১ টি। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে স্টেশনের সংখ্যা দাঁড়াবে ৭৩৫ টি। ২০০৮ সালে আগুন নেভানোর পানিবাহী গাড়ি ছিল মাত্র ২২৭ টি, যা বর্তমানে ৫৮৭ টি। অ্যাম্বুলেন্স ছিল মাত্র ৫০ টি যা বর্তমানে ১৯২ টি। টিটিএল বা উঁচু মইয়ের গাড়ি ছিল ৩ টি, যা বর্তমানে ২৮ টি। বিশেষায়িত গাড়ি ছিল ৫টি, বর্তমানে ৮৮ টি। উঁচু ভবনে অগ্নিনির্বাপন এবং উদ্ধার কাজ করার ক্ষেত্রে আগের সক্ষমতা ছিল মাত্র ৪৩ মিটার। অর্থাৎ ১২ এবং ১৩ তলা পর্যন্ত। এটি আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ৬৮ মিটার বা ২২ তলা পর্যন্ত উচ্চতায় কাজ করতে পারে এমন ৫ টি টিটিএল গাড়ি ক্রয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ টি টিটিএল গাড়ি ফায়ার সার্ভিসের বহরে যুক্ত হয়েছে।’

উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সারসংক্ষেপ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সচিব বলেন, ‘২০০৮ সালে ফায়ার সার্ভিসের জনবল ছিল ৬ হাজার ১৫০ জন, বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৩ জনে। আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মডেল ফায়ার স্টেশন নির্মাণ, ডুবুরি ইউনিট সম্প্রসারণ, ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারসহ নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার জন্য এর অংশ হিসেবে ৪৯ হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নেতৃত্বে সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর একটি আধুনিক ও জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান।’

‘এবারের ফায়ার সপ্তাহের প্রতিপাদ্য-‘দুর্ঘটনা-দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি’- এই প্রতিপাদ্য হৃদয়ে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেদের নিয়োজিত করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যগণ প্রতিটি দুর্ঘটনা-দুর্যোগে জীবনবাজি রেখে প্রথম সাড়াদানকারী হিসেবে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে বহুমাত্রিক সেবা দিয়ে আসছে। জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অনেক সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন।

কিন্তু মানুষের জীবন ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষাসহ উন্নত বাংলাদেশ গঠনে আপনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে একবিন্দুও পিছপা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় ১৩ জন ফায়ার ফাইটার আত্মত্যাগ করেছেন, যার স্বীকৃতিস্বরূপ তারা ‘অগ্নিবীর’ হিসেবে দেশবাসীর হৃদয়ে স্থান লাভ করেছে।’

কালের আলো/ডিএস/এমএম